আশুলিয়ায় বাড়িতে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর, ইউপি সদস্যকে কারাগারে প্রেরণ
আবারও বিতর্কে জড়ালেন হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি ও আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সমালোচিত ইউপি সদস্য শফিউল আলম সোহাগ। এবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশুলিয়ার নিরিবিলি এলাকার তার বাহিনী নিয়ে একটি বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালান এই ইউপি সদস্য।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় ইউপি সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে আসামিদের আদালতে পাঠানো হলে ইউপি সদস্য সোহাগকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
সম্পর্কিত খবর
এর আগে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রাত থেকে বুধবার (১০ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত আশুলিয়ার নবীনগরের আশেপাশের এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আশুলিয়া পাথালিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিউল আলম সোহাগ (৩২), রবিউল ইসলাম রনি (২৫), মো. তুহিন (২৫), ইসরাফিল (২৬), ফাহিম (৩২), হাবিব (২৪), রনি (৩০) ও আদিল (৩৬)।
আসামিদের মধ্যে এখনো পলাতক রয়েছেন- রেহমেত (১৯), সোহাগ (১৯), সাকিল শেখ (২৪), আতিকুর রহমান আশিক (২০), ফরহাদ (২৬), রাব্বি (২৮) ও জিহাদসহ (২৩) অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মুক্তধারা এলাকার একটি মাঠে বসেছিলেন তৌহিদ ও শাওন নামের দুই বন্ধু। এ সময় ফাহিমসহ ১০-১৫ জন যুবকের সঙ্গে তৌহিদ ও শাওন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ফাহিম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের হামলা করলে ফাহিমকে আটকিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় তৌহিদের লোকজন। বিষয়টি ইউপি সদস্য সোহাগ জানতে পেরে দুই শতাধিক লোক নিয়ে তৌহিদের বাড়িতে হামলা করে বাড়ির সদস্যদের মারধর করেন।
এসময় হামলাকারীরা তাওহীদের বোন তামান্নাকে (১৫) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার পোশাক টেনেহিঁচড়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে গলা চেপে ধরে মাটিতে ফেলে মারধর করে। ভুক্তভোগীর মা বকুল, ভাই তুহিন (২৬), খালাতো ভাই আল-আমিন (২৩) এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এলোপাতাড়ি মারধর করে সন্ত্রাসীরা।
এদিকে হামলার সময় হামলাকারীরা বকুল বেগমের গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, যার মূল্য ৭৫ হাজার টাকা, আলমারি থেকে নগদ ৯০ হাজার টাকা লুট করে। যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত তাওহীদ এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও আল-আমিন ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি ভুক্তভোগীর মা মোছা. বকুল বলেন, ইউপি সদস্য সোহাগ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে আমাদের বাসায় হামলা করে আমারদের মারধর, জিনিসপত্র ভাঙচুর ও লুটপার করেছে। আমার মেয়ের কাপড় ছিঁড়ে তার শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করেছে লম্পট সোহাগ। আমরা এই ঘটনার বিচার ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলে ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক বাকি আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, একসময় যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাভার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদ আলমের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এই শফিউল আলম সোহাগ। পরবর্তীতে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে তিনি সখ্যতা গড়েন আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে। বর্তমানে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সদস্য সোহাগ।