• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে সাত বছর কান্না

প্রকাশ:  ২৪ আগস্ট ২০২২, ১৫:১৯
কক্সবাজার প্রতিনিধি

সাত বছর ছেলে ফরহাদের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছেন রাহেলা বেগম মুস্তারী। চোখের সামনে ছেলের হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য তার পক্ষে ভোলা সম্ভব নয়। শোকে-দুঃখে তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। জীবনের এই শেষবেলায় তার একটাই প্রত্যাশা- মৃত্যুর আগে ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে চান তিনি।

২০১৫ সালের ৬ মে রাত ৯টার দিকে গুলি করার পর কুপিয়ে হত্যা করা হয় কলেজ শিক্ষক ফরহাদ উদ্দিনকে। মা রাহেলার সামনেই ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। ফরহাদ উদ্দিনের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া সদরের সিকদারপাড়ায়। তিনি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি কলেজে গণিতের শিক্ষক ছিলেন।

প্যারালাইজড হওয়ার পর থেকে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না রাহেলা বেগম। ভাঙা ভাঙা স্বরে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার ছেলের হত্যাকারীরা একজনও ধরা পড়েনি। চোখের সামনে তারা ঘুরে বেড়ায়। কেউ তাদের আটকায় না। মরার আগে হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে চাই। আল্লাহ যেন আমাকে সেই পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখেন।’

মামলার কাগজপত্র থেকে জানা যায়, ঘটনার পর ৮ মে নিহতের বাবা মোহাম্মদ ইউনুছ বাদি হয়ে পেকুয়া থানায় স্থানীয় ছালেহ জঙ্গি ওরফে ছোটন, তার স্ত্রী আসমাউল হোসনা লিপি, ছালেহের ভাই সিরাজুল মোস্তফা, নুরুল আবছার ও তার স্ত্রী শাহেদা বেগম এবং মেয়ে শিরিন জান্নাত আঁখির বিরুদ্ধে মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর পেকুয়া থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহীদ উল্লাহ ছালেহ ও তার স্ত্রী আসমাউল হোসনা লিপির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার বাদি মোহাম্মদ ইউনুছ না-রাজি দেন। পরে কক্সবাজার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত মামলার সব আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।

কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মোজাফ্ফর আহমদ হেলালী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর আদালত রায়ের দিন ধার্য করেছেন।’

এদিকে মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করার সাত বছর পেরিয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো বাড়িতে এসে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটাবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। গত ১৩ জুলাই নিরাপত্তা চেয়ে পেকুয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বাধ্য হয়েছি।’

‘গত সাত বছর থানা ও আদালতে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন হতভাগ্য এই বাবা।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরহাদ আলী বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরির তদন্ত চলছে। পুলিশ মামলার বাদির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। আসামিদের অবস্থান শনাক্তেও পুলিশ কাজ করছে।’

পূর্বপশ্চিম/ম

বিচার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close