• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

উত্তরাঞ্চলে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

প্রকাশ:  ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:২৫
পাবনা প্রতিনিধি

দেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। উত্তরের অনেক জেলায় সন্ধ্যা নামার আগেই কুয়াশা নামছে। সকালে দীর্ঘক্ষণ সূর্য থাকছে কুয়াশার চাদরে মোড়ানো।

এই অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। সন্ধ্যা নামতেই, কিংবা সকালে সড়কে অথবা বাড়ির আশপাশে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টার দৃশ্য দেখা গেছে। এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়তেই উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় ঠাণ্ডা-কাশিসহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ফলে হাসপাতালগুলোয় বেড়েছে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের চাপ।

শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ২৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিন দেশের কোথাও কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি।

এ ছাড়া নওগাঁর বদলগাছিতে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। নীলফামারীর ডিমলায় ১০ দশমিক ৭, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ৩, যশোরে ১০ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহের বিস্তৃতি দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত। ফলে গোপালগঞ্জেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে।

রাজধানীতে শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পাবনা প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার পাবনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে পাবনা অঞ্চলে সন্ধ্যা নামার আগেই কুয়াশা নামছে। বইছে শীতল বাতাস। ফলে শীতের দাপট বেড়েছে। শুক্রবার এই জেলায় সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও শীতের তীব্রতা বেশি ছিল।

এদিক, শীতের তীব্রতা বাড়ায় ছিন্নমূল ও দুস্থ মানুষেরা বিপাকে পড়েছে। শীত নিবারণে আগুন জ্বালিয়ে খানিকটা উষ্ণতার পরশ খুঁজতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষকে।

আবহাওয়ার বৈরী প্রভাবে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে জেলায়। হাসপাতালগুলোয় বেড়েছে রোগীর আনাগোনা। হাসপাতাল সূত্র বলেছে, গত দুই-তিনদিনে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের গরম কাপড় পরিয়ে রাখার পাশাপাশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন জানান, এবার শীতার্ত মানুষের সহায়তায় জেলায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পর্যাপ্ত কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার মানুষের মধ্যে এসব কম্বল বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। নওগাঁ, পঞ্চগড়, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, তাপমাত্রা কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। আর পরবর্তী পাঁচদিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ের শেষের দিকে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে।

শৈত্যপ্রবাহ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close