• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

মাহির গণসংযোগে পাশে নেই স্থানীয় নেতা-কর্মীরা

প্রকাশ:  ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:০৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহি। রোববার এ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড।

জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অনুমতি সাপেক্ষেই তিনি দলটির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন।

মাহি ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন। স্থানীয় সাধারণ মানুষ তাকে নিয়ে বেশ আগ্রহও দেখাচ্ছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলছেন, দলে মাহির ত্যাগ, শ্রম, অবদান, সংগ্রাম কোনোটাই নেই। পোড় খাওয়া নেতা-কর্মীরা এমন কাউকে দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মেনে নেবেন না।

মাহিয়া মাহি দাবি করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষের জন্য সাধ্যমতো কাজ করে আসছেন। মনোনয়ন পেলে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতবেন তিনি।

মাহি জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট একাংশের (ফাল্গুনী হামিদ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘এলাকায় গণসংযোগে গিয়ে বিপুল সাড়া পেয়েছি। আশা করি দলের মনোনয়ন পাব। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীবান্ধব এবং নারীর ক্ষমতায়নে তিনি প্রচুর কাজ করেছেন। সার্বিক বিচারে নিশ্চয় তিনি আমাকেই যোগ্য প্রার্থী মনে করবেন।’

মাহির মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সার্বিক বিচার-বিবেচনা করে মনোনয়ন দেয়া হবে। দলে ত্যাগ, শ্রম, জনপ্রিয়তা, সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং বিজয়ী হওয়ার সামর্থ্য বিবেচনা করা হবে।

‘এ আসনে দলের স্থানীয় পর্যায়ের বড় নেতারাও মনোনয়ন চান। বোর্ডের বৈঠকে সব বিষয় আলোচনা হবে। দলের সভাপতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। কাজেই আগেই বলার সুযোগ নেই কে মনোনয়ন পাবেন আর কে পাবেন না।’

চিত্রনায়িকা মাহির পুরো নাম শারমিন আক্তার সরকার। তিনি নাচোলের সন্তান। এ উপজেলাসহ গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলা মিলিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন। গত সোম ও মঙ্গলবার নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তিনি গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। বিপুলসংখ্যক মানুষ এসব কর্মসূচিতে যোগ দেন। কিন্তু দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া।

মাহির স্বামী রকিব সরকারেরও রাজনৈতিক পরিচয় আছে। তিনি আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া ছাত্রলীগের মাহমুদ হাসান রিপন-মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন কমিটির নেতা ছিলেন তিনি।

রকিব সরকার বলেন, ‘মাহির মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলসংশ্লিষ্টতার অভাবের যে কথা বলা হচ্ছে তা ধোপে টিকবে না। আমরা দুজনেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। আর বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এই অঞ্চলে মাহি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। ১ ফেব্রুয়ারি এই আসনে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।

মাহির পাশাপাশি এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মু. জিয়াউর রহমান। তিনি ২০০৮ সালে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার পাশাপাশি সাবেক এমপি ও গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, নাচোল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিমা বেগম এ আসনে মনোনয়ন চান।

নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, ‘মাহি এই আসনে প্রচার ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন। অথচ মনোনয়ন পাওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। এখন দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। কে প্রার্থী সেটা আমাদের কাছে মুখ্য নয়। আসল লক্ষ্য নৌকার বিজয়।’

ভোলাহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এখানকার নেতা, যাদের কাছে আমরা যাই, তাদের কেউ মনোনয়ন পেলে ভালো হবে। এখন মাহিয়া মাহি মনোনয়ন চাচ্ছেন। এটা কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত। আমরা এটুকু বলতে পারি, কেন্দ্র যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তার পক্ষেই কাজ করবে।’

মাহিয়া মাহি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close