• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, ইউএনওর দ্বারস্থ শিক্ষকরা

প্রকাশ:  ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:১৭
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার ধামরাইয়ে টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেতন না দেওয়া ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ১৬ শিক্ষক।

সম্পর্কিত খবর

    অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নিয়ম অনুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ডের নামে শিক্ষকদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করে কেটে নেওয়া হতো। এভাবে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত অর্থ কেটে রাখা হয়। এরমধ্যে চাকরি ছেড়ে যাওয়া কয়েকজনের আংশিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পরিশোধ করা হলেও বেশিরভাগ শিক্ষকই এই টাকা পাননি। এছাড়া ২০২০ সালের মার্চ মাসের বেতনও পাননি তারা। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার বলা হলেও অর্থ পরিশোধ না করায় তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) অভিযোগ দেন।

    প্রায় দশ বছর ধরে টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গণিত বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন আয়নাল হক। তার দুই সন্তানকেও পড়িয়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা নেওয়ার নিয়ম চালু হয়। এরপর টানা ২০২০ সাল পর্যন্ত টাকা কেটে রেখেছেন তারা। কয়েকজনকে সেই সময় একাংশ টাকা দেয়। পরবর্তীতে আমি ২০২৩ সালের জুনে নিয়ম মেনে চাকরি ছেড়ে দেই। এরপর তাদের কাছে বারবার টাকা চাইলেও টাকা দেননি তারা।

    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সহকারী শাখা প্রধান মমতাজ বেগম বলেন, আমি আট বছর সেখানে শিক্ষকতা করেছি। ওই সময় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টাকা কেটে রেখেছে। কিন্তু আমার ২০২০ সালের মার্চ মাসের বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ পরিশোধ করেননি তারা।

    এদিকে টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা হয়। প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তারা। তবে এটির বর্তমান প্রধানের দাবি, অভিযোগকারী কয়েক শিক্ষকের কাছে কয়েক লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। যদিও সাবেক শাখা প্রধান জানান, শিক্ষকের সন্তানদের কাছ থেকে অর্ধেক বেতন নেওয়া হতো। তারা পুরে টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি দায়িত্বে না থাকায় ফান্ডের অর্থ পরিশোধের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

    টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ধামরাই শাখা প্রধান মহিদুল ইসলাম জানান আট মাস ধরে এখানে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তার দাবি, অভিযোগকারী শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজনের সন্তান এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়েছেন৷ তাদের একেকজনের কাছে অর্থ পাওনা রয়েছে। এরমধ্যে আয়নাল হকের দুই সন্তানের কাছে ২,৪৬,৭০০ টাকা, মমতাজ বেগমের দুই সন্তানের পড়াশোনা বাবদ ৩,২৩,৬০০ টাকাসহ কয়েকজনের কাছে কয়েক লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

    তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী টাকা কেটে রাখা হয়েছে। তবে তাদের কাছে সন্তান পড়ানো বাবদ টাকা পাওনা ছিল। তারা কখনো আমাদের কাছে আসেননি। যেহেতু তারা বাইরে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আইনগত ভাবেই মোকাবিলা করা হবে। আর পাওনা থাকলে সেটি দেওয়া হবে।

    মানসুরা আক্তার নামে এক শিক্ষক জানান, তার মেয়ে পড়ানো বাবদ বকেয়া টাকা তার আগের মাসের বেতন থেকে কেটে রাখা হয়। একইভাবে আয়নাল হক, মমতাজ বেগমসহ কয়েকজনও জানান প্রতিমাসে বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নগদ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এটির দায়িত্বে থাকা সোহরাওয়ার্দী হোসেন। তিনি বলেন, শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।

    শিক্ষকদের সন্তানদের ফির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকরা নগদ অর্থে সেই টাকা পরিশোধ করেছেন। কারো টাকা বকেয়া আছে কি না সেটি জানা নেই। আর আমি দায়িত্বে নেই। ফলে বিস্তারিত বলতে পারছি না।

    টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান মাসুদ রানা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। উপজেলা থেকে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে সরাসরি কথা বলে মোকাবিলা করা হবে।

    ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে। সমাধান না হলে আইনত যে ব্যবস্থা তা নেওয়া হবে।

    টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close