নাটোরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড 

নাটোরে যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাসনা হেনাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী শরিফুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদিকে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন জনকে খালাস দেন বিচারক।

সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের পেশকার সাইফুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সাজাপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম সদর উপজেলার করোটা গ্রামের সামসুল হকের ছেলে।

স্পেশাল কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর করোটা গ্রামের সামসুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে পাশ্ববর্তী গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে হাসনা হেনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য হাসনা হেনাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে যৌতুকের জন্য আর কোনদিন নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গীকার করলে তাদের পুনরায় বিয়ে হয়।

সংসার করার সময় হাসনা হেনা ৭ অন্তঃসত্ত্বা হন। কিন্তু শরিফুল ও তার পরিবোরের সদস্যদের নির্যাতন বন্ধ হয় না। নির্যাতনের প্রতিবাদ করলে ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট রাতে হাসনা হেনাকে পিটিয়ে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যান শরিফুলের পরিবার। পরেরদিন সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পেরে শরিফুলের বাড়িতে গিয়ে ঘরের বারান্দায় মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন হাসনা হেনার মা মর্জিনা বেগম। এ ঘটনায় নিহতের মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে হাসনা হেনার স্বামীসহ ৪ জনের নামে আদালতে মামলা করেন। মামলার স্বাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে আসামির উপস্থিতিতে আদালতের বিচারক আজ রায় ঘোষণা করেন।