• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

গাজীপুরে রেললাইন কেটে নাশকতা, কাউন্সিলরসহ গ্রেপ্তার ৭

প্রকাশ:  ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৪৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

রেললাইন কেটে নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আজমল ভূইয়াসহ (৫০) সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম। শনিবার ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার রাজবাড়ী উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. হাসান আজমল ভূঁইয়া (৫০), নেত্রকোনার মদন উপজেলার বারই বাজার এলাকার জান্নাতুল ইসলাম (২৩), ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বান্দীয়া এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান (২৫), গাজীপুর সদরের ভানোয়া এলাকার জুলকার নাইন আশরাফি ওরফে হৃদয় (৩৫), উত্তর ছায়াবিথী এলাকার বাসিন্দা শাহানুর আলম (৫৩), কানাইয়া পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. সাইদুল ইসলাম (৩২) ও মধ্য ছায়াবিথী এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা (৩৮)।

পুলিশ জানায়, বুধবার ভোররাতে ভাওয়াল গাজীপুর ও রাজেন্দ্রপুর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী বনখড়িয়া এলাকায় রেললাইন কেটে রাখে দুর্বৃত্তরা। সেখানে ভোর ৪টার দিকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ট্রেনযাত্রী আসলাম মিয়া নিহত হন। আহত হন লোকো মাস্টারসহ বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলওয়ে থানায় মামলা হয়।

তদন্তে নেমে গোপন খবর ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে শনিবার জান্নাতুল ইসলাম (২৩) ও মেহেদী হাসান (২৫) নামে দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তারা দুজন জানান, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে তারা। ঢাকায় না গিয়ে তারা গাড়িটি নিয়ে গাজীপুরেই ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তাদের সবার মুখে ছিল মুখোশ। এর মধ্যে তারা গাড়িতে আরও কয়েকজনকে উঠিয়ে নেয়। রাতের দিকে তারা জোড় পুকুরপাড় এলাকার ইবনে সিনহা তোহার বাড়ি থেকে রেললাইন কাটার যন্ত্রপাতি ও দক্ষিণ সালনার উসমান গণির ভাড়া দেওয়া “বাঁশ বাগান” নামে রেস্তোরাঁ থেকে দুটি সিলিন্ডার তুলে নেয়। যন্ত্রপাতি ওঠানোর পর তারা আরও দুইজনকে গাড়িতে ওঠায়। দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত ঘোরাঘুরির পর ঘটনাস্থল থেকে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে বনখড়িয়া নামে একটি এলাকায় বনের পাশে গাড়ি রেখে তারা সব সরঞ্জামসহ হেঁটে বনখড়িয়া চিলাই রেল ব্রিজের পাশে যায়।

রাত ৩-৪টার দিকে রেললাইনের প্রায় ২০ ফুট লাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে তারা। এরপর ভাড়া করা গাড়িটি নিয়ে ঢাকায় এসে চারজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে ও বাকিরা মিরপুরে নেমে যায়। তাদের কাছে ভাড়ার টাকা না থাকায় একজনকে ফোন করে চালককে মোবাইল ব্যাংকে টাকা পাঠাতে বলেন। অপর প্রান্ত থেকে চালকের অ্যাকাউন্টে আট হাজার টাকা পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তাররা জানায়, গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম ও আজিম উদ্দিন এবং আজিম উদ্দিন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ত্বোহার নেতৃত্বে আটজন এ ঘটনায় জড়িত। আর এর মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নম্বর কাউন্সিলর আজমল ভূইয়া। পুরো ঘটনায় সঙ্গে জড়িত সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিতে জিএমপির পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম জানান, গত ১১ ডিসেম্বর ওই কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তার বাসা ও বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা বৈঠক করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বৈঠকে তারা রেললাইন কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। বড় ঘটনা ঘটালে সেটি দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হবে এজন্য তারা এমন পরিকল্পনা করে।

ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ জিএমপি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর,মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ,রেললাইন,নাশকতা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close