• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে চাই: সালমা ইসলাম

প্রকাশ:  ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৩০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

দোহার ও নবাবগঞ্জের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে আমি কাজ করতে চাই। সেজন্য আপনারা আমাকে আগামী ৭ জানুয়ারি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।

মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির আয়োজনে নির্বাচনি সভায় ও উঠান বৈঠকে পার্টি মনোনীত ঢাকা-১ আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ভোটারদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।

শীতের পড়ন্ত বিকালে পদ্মা নদীর তীরবর্তী দোহার উপজেলার নারিশা ঝনকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

সেখানে তিনি আরও বলেন, যেকোনো অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আমি আপনাদের পাশে ছিলাম আগামীতেও থাকব ইনশাআল্লাহ। এ সময় ‘সালমা ইসলাম এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’ ও ‘লাঙ্গল লাঙ্গল’ স্লোগানে কম্পন উঠে উঠান বৈঠকে।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালমা ইসলাম বলেন, পদ্মার ভাঙনে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে দোহারবাসীর। আমি নির্বাচিত হলে সরকারিভাবে তালিকা করে অতি-হতদরিদ্র ভাঙন কবলিত পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করব। এছাড়া ভাঙনরোধে চলমান কার্যক্রমকে গতিশীল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সালমা ইসলাম বলেন, পদ্মাপাড়ের পিছিয়ে পড়া অসংখ্য মানুষ যারা গৃহহীন, ভূমিহীন তাদের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে, আমি আপনাদের কল্যাণ কাজ করতে চাই। আপনাদের পাশে থেকে আপনার ছেলেমেয়ের চাকরি, শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। আগামীতে নতুন প্রজন্মের জন্য কাজ করে যেতে চাই। যাতে ওরা আগামী দিনে দেশ-বিদেশে দোহার-নবাবগঞ্জকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।

এ সময় নির্বাচনি উঠান বৈঠক জনসভায় রূপান্তর হয়। উঠান বৈঠকে অংশ নেওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সালমা ইসলামকে ভোটের পরিবেশ তৈরি করার আহবান জানান। তিনি বলেন, কোনো ভয় নেই আপনাদের। আপনিই আপনার ভোটের মালিক, তাই সিদ্ধান্ত আপনার। আমি আশা করি সত্য সুন্দর এক মানবিক দোহার ও নবাবগঞ্জ উপহার দিব আপনাদের। শুধু একটিবার সুযোগ দিন লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিন।

এরপর সুতারপাড়া ইউনিয়নের মারোয়াপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় নির্বাচনি সভায় অংশগ্রহণ করেন সালমা ইসলাম। সেখানে তিনি বলেন, প্রিয় দোহারবাসী আপনারা আমার সঙ্গে থাকলে এ অঞ্চলকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করব। বেকার তরুণ-তরুণী যারা লেখাপড়া শিখে বাড়িতে বসে আছেন তাদের জন্য কর্মসংস্থানে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করব। এছাড়া ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়তে নতুন নতুন ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হবে। আমি সার্বিক সহায়তা করার চেষ্টা করব আপনাদের।

তিনি আরও বলেন, আমি এই এলাকার এমপি নির্বাচিত হলে পূর্বের ধারাবাহিকতায় উন্নত রাস্তাঘাট, শহরের আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাসমূহ গ্রামে সম্প্রসারণ করব। এছাড়া মানসম্পন্ন শিক্ষা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক করব। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে দোহার-নবাবগঞ্জের প্রতিটি গ্রামের জনসাধারণকে শহরের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা ‘লাঙ্গল লাঙ্গল’ স্লোগানে সভাস্থলকে মুখরিত করে তোলেন।

সালমা ইসলাম বলেন, মানুষ জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চায়। প্রতিটি মানুষের নাগরিক অধিকার বাস্তবায়নের ও প্রয়োগের অধিকার আমাদের রাষ্ট্রীয় সংবিধানে রয়েছে। আমরা অবশ্যই আমাদের অধিকার আদায় করতে সচেষ্ট থাকব।

এ সময় তিনি দোহার-নবাবগঞ্জের প্রতিটি মানুষের কাছে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট চেয়ে বলেন, আমি আপনাদের কাছে এসেছি এই এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে। আমার পরিবারের উন্নয়নের জন্য নয়। আমার পরিবারের সদস্যরা আপনাদের স্বজন ও আপনজন। কারণ আমার স্বামী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম আপনাদের প্রিয় মানুষ ছিলেন। তিনি আপনাদের ব্যথায় ব্যথিত হতেন। দোহার-নবাবগঞ্জ নিয়ে তার স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। সেটি বাস্তবায়নে আপনাদের কাছে ছুটে আসছি। আপনারা নিশ্চয়ই আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।

ভোটারদের উদ্দেশে সালমা ইসলাম বলেন, প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসুন দোহার-নবাবগঞ্জের দারিদ্র্য বিমোচন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে লাঙ্গল প্রতীককে বিজয়ী করতে একসঙ্গে কাজ করি। বিগত সময়ে যারা এই এলাকার জনপ্রতিনিধি হয়ে ছিলেন তাদের আপনারা চিনেন। তারা কতটুকু সময় আপনাদের পেছনে ব্যয় করেছেন তাও আপনারা জানেন। আমার কাছে যেতে কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হবে না। আপনারা যখনই চাইবেন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। আপনাদের সুখ ও দুঃখের কথা জানাতে পারবেন। আমি ছিলাম, আমি থাকব আপনাদের পাশে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আমার সঙ্গে টেন্ডারবাজ, জমি ও বসত বাড়ি দখলের সঙ্গে জড়িত লোকজনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি বরাদ্দ, মসজিদ মন্দিরের বরাদ্দের টাকা, উন্নয়নের টাকা লুটপাট করার কোনো অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে নেই। যে কারণে আমি আজ আপনাদের কাছে বড় মুখ করে এসেছি। অনিয়ম ও অন্যায়ে জড়িত থাকলে আজ আপনাদের সামনে হাজির হতে লজ্জাবোধ করতাম। সব কিছু বিবেচনা করে আমাকে আপনারা ভোট দিন।

সালমা ইসলাম বলেন, যেখানে সব মানুষ সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করবে। যেখানে দরিদ্র অসহায় মানুষের ওপর কোনো নির্যাতন হবে না। প্রশাসন থাকবে অসহায় মানুষের পক্ষে। আমি আপনাদের ভোটে দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনে এমপি নির্বাচিত হলে প্রশাসনে কোনো হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা বিগত সময় যেমন করি নাই; আগামী দিনেও করব না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক সহায়তায় একটি জনকল্যাণমুখী প্রশাসন যাতে এই এলাকায় আপনাদের উপহার দিতে পারি সেই লক্ষ্যে কাজ করব।

একই দিন তিনি শেষ বৈঠক করেছেন কুসমহাটি ইউনিয়নের আউলিয়াবাদে। সেখানে শত শত মানুষ উঠান বৈঠকে যোগ দেন। আর দিনের প্রথমে চুড়াইন ইউনিয়নের মোসলেমহাটিতে গোবিন্দপুর ও সোনাতলায় গণসংযোগ করেছেন।

এ সময় নবাবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জুয়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির নেতা মশিউর রহমান, নবাবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, বোরহান হোসেন, দোহার উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হায়দার ব্যাপারী, সাধারণ সম্পাদক জানে আলম, ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ, আব্দুল আলীম, মাসুদ মাঝি, মো. মানিক, মিল্লাত হোসেন, বাবুল হোসেন, আইরিন গমেজ, নজরুল ইসলাম, মনির হোসেনসহ দোহার উপজেলা জাতীয় পার্টি, মহিলা পার্টি ও ছাত্র সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দোহার,অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম,নির্বাচন,ঢাকা-১,জাতীয় পার্টি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close