• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

শাহজাদপুরে রড চুরি করতে দেখে ফেলায় ফেরদৌস হত্যা

প্রকাশ:  ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:০৫
শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে গাড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর আর. কে টেক্সটাইলের নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌস নিখোঁজের ৫ দিন পর নিজ কর্মস্থল আর. কে টেক্সটাইলের মধ্যে বালুর নিচে পুতেঁ রাখা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকারি মোঃ মামুন হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

রড চুরি করতে দেখে ফেলার জন্যই নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌসকে হত্যা করেছে বলে জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(শাহজাদপুর সার্কেল) মোঃ কামরুজ্জামান। এর আগে নিহত ফেরদৌসের বাবা শাহজাদপুর থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়রী করেন।

নিহত নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ ফেরদৌস(১৭) শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মোঃ আক্কাস আলীর ছেলে ও আর. কে টেক্সটাইলের নিরাপত্তা প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। অপরদিকে গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ মামুন হোসেন (৩০) উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের ঘোড়শাল গ্রামের মোঃ আনোয়ার হোসেনের ছেলে ও উক্ত টেক্সটাইলের চাকুরিচ্যুত শ্রমিক।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(শাহজাদপুর সার্কেল) মোঃ কামরুজ্জামান লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ফেরদৌসের হত্যাকারী মামুন একজন কাপড়ের প্রিন্ট ডিজাইনার। সে ২০২০ সালে উক্ত আর. কে টেক্সটাইল মিলে কাপড়ের প্রিন্ট ডিজাইনার হিসেবে যোগদান করে। একই জায়গায় চাকুরি করার সুবাদে নিহত ফেরদৌসের সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু উক্ত মিল থেকে মাঝে মধ্যেই মামুন লোহার রড চুরি করতো। প্রায় ৪-৫ মাস আগে রড চুরির সময় মামুনকে নিহত ফেরদৌস হাতে নাতে ধরে ফেলে। এতে মামুনের চাকুরি চলে যায় এবং ফেরদৌসের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। এরপর মামুন ঢাকাতে গিয়ে একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানি তে কাজ শুরু করে।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ জানুয়ারী সকালে মামুন ঢাকা থেকে শাহজাদপুরে এসে ফেরদৌসের সাথে দেখা করে আগের ঘটনার জন্য মাফ চায় এবং ফেরদৌসের সাথে রাতে মিলের মধ্যে থাকতে চায়। ফেরদৌস সরল বিশ্বাসে তাকে থাকতে দেয়। এভাবে দুইদিন পর ৬ জানুয়ারী রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে মামুন আবারও চুরির উদ্দেশ্যে মিলের মধ্যে লোহার রড খুলতে থাকে। এসময় ফেরদৌসের ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং সে মামুন কে নিষেধ করে। তখন মামুন লোহা খোলার রেঞ্জ দিয়ে ফেরদৌসের মাথার বাম পাশে আঘাত করে। আঘাতে তার মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনের কারনে সে মারা গেলে পাশেই থাকা কোদাল দিয়ে গর্ত করে ফেরদৌসের লাশ বালির মধ্যে পুতে রেখে মিলের প্রধান ফটকে তালা মেরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় গত ১০ জানুয়ারী সকালে ডিএমপি, ঢাকার আদাবর থানাধীন সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামুন হোসেনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাহার জিম্মা হইতে নিহত ফেরদৌসের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। পরবর্তীতে তাহার দেয়া তথ্য মতে আর. কে. টেক্সটাইল মিলস এর ভিতরে মাটির নিচে পুতে রাখা অবস্থায় নিহত ফেরদৌসের লাশ উদ্ধারসহ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কম্বল ও লোহার সোলাই রেঞ্জ এবং গর্ত করার কাজে ব্যবহৃত কোদাল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মামুন হোসেন নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌসকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলেও সংবাদ সন্মেলন জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান।এ সময় অফিসার ইনচার্জ খায়রুল বাশার ওসি তদন্ত সাখাওয়াত সহ হ থানার সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত,হত্যা,অপরাধ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close