রাউজানে ১৩০ কানি অনাবাদি জমিতে তিন যুবকের কৃষি বিপ্লব
চট্টগ্রামের রাউজানে ১৩০ কানি অনাবাদি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে বোরো হাইব্রিড জাতের ধানের চাষাবাদ করেছেন তিন যুবক। তাদের প্রচেষ্টায় বিস্তীর্ণ ফসলি জমি এখন বোরোর চারায় সবুজে সয়লাব।
সম্পর্কিত খবর
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের চতর বিল এলাকায় বোরোর আবাদ করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন অর্ধশতাধিক কামলা।
স্থানীয় যুবক লাভলু বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার দুই কৃষক জেয়ারতের উদ্দেশ্যে মাইজভান্ডার দরবার শরীফে যাওয়ার পথে জমিগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখে তাদের এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করে জমিগুলোতে চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে তাদের সাথে বসে আমরা তিনজন বসে সিন্ধান্ত নিলাম ৮০ কানি জমিতে আমনের চাষ করার। প্রথমে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় জমিগুলো কৃষি কাজের উপযোগী করতে আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়। আমন মৌসুমে তিনজনকে লোকসান গুনতে হয় আটলাখ টাকা। তবুও দমে না গিয়ে বোরো মৌসুমেও চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিন কৃষক।
বর্তমানে বিস্তীর্ণ জমিতে ৬০ জনের মতো কামলা দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার দুই কৃষক আনোয়ার হোসেন ও তোফায়েল আহমেদ জানান, এলাকায় সীম চাষ দিয়ে দুইজন কৃষিকাজে সম্পৃক্ত হন। এরপর কৃষিটা হয়ে উঠে দুজনের নেশা। এই নেশার টানে লোহাগাড়া উপজেলা থেকে সুদূর রাউজান এসে অনাবাদি জমিতে গড়ে তুলছেন শষ্য ভান্ডার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ তৈয়ব জানান, তিনজন যুবকের প্রচেষ্টায় এলাকার অনাবাদি জমিতে বোরোর আবাদ হচ্ছে। এটি অবশ্যই খুবই ভাল একটি উদ্যোগ। এরফলে স্থানীয় কৃষকরা আরো উদ্বুদ্ধ হবে।কৃষক তোফায়েল বলেন, এই মৌসুমে ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলেও খুব একটা লাভ হবেনা। তবুও অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করেছি এই দৃশ্যটা আমাদের প্রাপ্তি। কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, লাভ-লোকসানের কথা বিবেচনা না করে কোনো জমি যাতে পতিত না হয় সেজন্য আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আমরা পর্যায়ক্রমে বাকী অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করার উদ্যোগ নেব।
উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন দাশ বলেন, তিন যুবক যে উদ্যোগ নিয়েছেন এটি নিঃসন্দেহে এলাকার কৃষিখাতে একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির জানান, তিন যুবক বিস্তীর্ণ অনাবাদি জমিতে চাষাবাদের যে উদ্যোগ নিয়েছেন এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। তাদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা দেওয়া হবে।