• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ময়লা-আবর্জনার স্তুপ মহাসড়কে

প্রকাশ:  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলাধীন ফেনী-মাইজদী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাতুভূঞা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় আবর্জনার স্তুপ রাখা হচ্ছে। এতে আশপাশের এলাকার বাসিন্দা ও চলাচলকারীদের মাঝে অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে এ আবর্জনা অপসারণ ও জৈব সার উৎপাদনে ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্প আগামী ২ বছরে আলোর মুখ দেখবে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর এলাকার আবর্জনাগুলো প্রতিদিন এখানে ফেলা হয়। আশপাশের এলাকা আশ্রাফপুর, কৃষ্ণরামপুর ও মাতুভূঞা এলাকার বাসিন্দারা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েও কোন প্রতিকার পাননি। অনেক সময় ময়লা উপচে সড়কের উপর ফেলায় যানবাহনও আটকে যায়।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর দেশের ৬৪টি জেলায় আবর্জনা থেকে জৈব সার উৎপাদনের লক্ষ্যে ‘ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম (সিডিএম)’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দাগনভূঞা পৌরসভার বিশেষ ও পরিবেশ বান্ধব প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১৫০ শতক জায়গা প্রয়োজন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে ৪৪ কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, নির্ধারিত জায়গায় ওয়াটার সাপ্লাই, ড্যাম্পিং ও রিসাইকেল করা হবে। ইতিমধ্যে বদরপুর, রামানন্দপুর ও কৃষ্ণরামপুরে ৩টি টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। উল্লেখিত প্রকল্পে ৩০ শতক জায়গায় রিজার্ভার, ৩০ শতক জায়গায় ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ৩৬ কিলোমিটার পানির লাইন ও ১২ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। অপরদিকে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লানের জন্য পৌর মেয়র ওমর ফারুক খান ব্যক্তিগতভাবে ৯শতাংশ জায়গা পৌরসভাকে দান করেন।

সূত্রে জানা গেছে, স্বয়ংক্রিয় মেশিনের সাহায্যে সংগৃহীত বর্জ্য প্রাথমিক পর্যায়ে পৃথক করা হবে। তাছাড়া পৃথকীকরণ কাজে জনসচেতনতা খুবই জরুরী। সাধারণ মানুষকে এ কাজে সম্পৃক্ত করা গেলে, পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য বিষয়ে নাগরিকদের ধারনা দিতে প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া হলে নাগরিকরা নিজেরাই পৃথকীকরণের কাজটি করে ফেলবেন। পরবর্তীতে পচনশীল আবর্জনা থেকে উৎপাদিত হবে জৈব সার।

২০১২ সালে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের সহায়তায় বাংলাদেশ শিল্প ও বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে। সমীক্ষার ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে, বাসা-বাড়ী ও রাস্তা-ঘাটে যেসব আবর্জনা পাওয়া যায় তার ৮০শতাংশ জৈব সার প্রস্তুতে বিবেচিত হয়। এতে বলা আছে, প্রতি টন (১০০০ কেজি) আবর্জনা থেকে ৭ থেকে ৮ শ কেজি জৈব সার উৎপাদন করা সম্ভব।

একই সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি কেজি আবর্জনা থেকে ০.০৬ ঘনমিটার গ্যাস বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট বাষ্প দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনও করা সম্ভব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রতি টন আবর্জনায় ৭-৮শ কেজি জৈব সার পাওয়া যাবে। এক কেজি জৈব সারের বাজারমূল্য ৭ থেকে ৮ টাকা। সে হিসেবে প্রতি টন জৈব সারের মূল্য ৪ হাজার ৯ শ থেকে ৫ হাজার ৬ শ টাকা।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু হানিফ জানান, শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি সহ পৌর এলাকা থেকে কমপক্ষে প্রতিদিন ১৫-১৬ টন আবর্জনা ফেলা হয়। এটি আমরা সম্পদে পরিণত করতে চাই।

এবিষয়ে দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খান বলেন, উল্লেখিত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তিনি বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পৌরবাসীর একদিকে যেমন দুর্ভোগ কমবে অন্যদিকে পৌর এলাকার সৌন্দর্য্যও বাড়বে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হতে বরাদ্ধের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।

/পি.এস

ফেনী,আবর্জনা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close