নওগাঁয় অনুমোদন ছাড়াই চলছে বেশিরভাগ ইটভাটা
আইন লংঙ্ঘন করে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠছে নওগাঁয় ইটভাটা। অনুমোদন ছাড়াই চলছে অধিকাংশ চুল্লি। এসব ইটভাটার মাটি কাটা হচ্ছে ফসলি জমির টপ-সয়েল (উপরিভাগ)। আবার সেই ভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। অপরিকল্পিত ভাটার বিষাক্ত প্রভাবে চরম ক্ষতি হচ্ছে প্রকৃতির। ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
সূত্রে জানা, জেলার ১১টি উপজেলায় কতটি ইটভাটা আছে সেই তথ্য দিতে পারেনি প্রশাসন। ইট ভাটার মালিক সমিতির সাথে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি সঠিক হিসাব। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর এলাকার চিত্র এটি। এভাবেই অবাদে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির টপসয়েল (উপরিভাগ)।
সম্পর্কিত খবর
যার ফলে ফসলি জমি হারাচ্ছে উর্বরা শক্তি। ফসলের ক্ষেত আর বসতি এলাকায় বেআইনীভাবে গড়ে তোলা হয়েছে জেলার অধিকাংশ ইটভাটা। তাতে আবার কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ইট ভাটার ক্ষতিকর প্রভাবে নষ্ট হচ্ছে জমির পাকা ধান, সাক-সবজি, গাছপালা ও ফলমূল। সরাসরি বিরুপ প্রভাব পড়ছে প্রকৃতি আর জনজীবনে।
খাজুর গ্রামের রহমত আলী, ইয়াসিনসহ অনেকেই জানান, কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে অর্থের লোভ দেখিয়ে কাটা হচ্ছে জমির টপ-সয়েল (উপরিভাগ)। যার ফলে ফসলি জমি হারাচ্ছে উর্বরা শক্তি। যা ফসল উৎপাদনে মারাত্মক হুমকি ফেলে দিচ্ছে। ভাটার আশেপাশের ফসল ও ফলদ গাছগুলোতে আর আগের মতো ফলন হয় না। এক এক করে এই ভূমি দস্যুরা গিলে খাচ্ছে মহামূল্যবান জমির উর্বর মাটি। এথেকে আমাদের সবাইকে বাঁচাতে হলে আগে সাধারন মানুষদের মাঝে বৃদ্ধি করতে সচেতনতা।
নওগাঁ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন এ ক্ষতি কৃষকরা কখনো পুষিয়ে নিতে পারবে না। আমার দপ্তরের লোকজনরা সব সময় কৃষকদের এই বিষয়ে সচেতন করে আসছে কিন্তু অর্থের লোভে পড়ে তারা এই স্থায়ী ক্ষতিকে মাথায় নিচ্ছে। যে সব জমি থেকে এই টপসয়েল বিক্রি করা হচ্ছে সেই সব জমিতে ভবিষ্যতে আর কোন ফসল ফলানো সম্ভব নয় শুধুমাত্র পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এথেকে রেহাই পেতে হলে প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে। নওগাঁ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। প্রশাসনের একার পক্ষে এর প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। জনগণসহ সবাই একত্রিত হয়ে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আর সবাইকে শপথ নিতে হবে যতই অর্থের লোভ দেখাক ভূমি দস্যুরা আমরা সেই লোভে গা না ভাসিয়ে আমাদের সম্পদ আমরাই রক্ষা করবো।
পিবিডি/আর-এইচ