• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

আতিয়া মহলে অভিযানের দুই বছর: শিগগিরই চার্জশিট

প্রকাশ:  ২৫ মার্চ ২০১৯, ১৬:১০
সিলেট প্রতিনিধি

২০১৭ সালের ২৪ মার্চ। দেশ বিদেশে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিল সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ‘আতিয়া মহল’ । ওই বাড়িতে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান হয়েছিল। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলার সময় ওই ভবনে বহু বিস্ফোরণ ঘটে এবং ব্যাপক গোলাগুলি চলে।

অভিযান চলার সময় এবং পরে ১১ ব্যক্তির মৃত্যু হয় । বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন র‍্যাব, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অনেকেই। আলোচিত আতিয়া মহলের জঙ্গি বিরোধী অভিযানের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে রোববার (২৪ মার্চ)।

সেই আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং অভিযান চলাকালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলাই বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কাছে।

ইতিপূর্বে মামলাগুলোতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, আতিয়া মহলে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে আত্মহুতি দেওয়া নারী জঙ্গি মঞ্জিয়ারা বেগম ওরফে মর্জিনার বোন আর্জিনা (১৯) ও তার স্বামী জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৫) এবং অপর আসামি হাসান (২৬)।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সংঘঠিত জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ এই তিন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তারা চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলো। চট্টগ্রাম থেকে এনে তাদের সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়।

সূত্র জানায়, সিলেট মহানগরীর দক্ষিণ সুরমার ২৭ নং ওয়ার্ডের শিববাড়িস্থ ‘আতিয়া মহলে’ সেনাবাহিনীর ১১১ ঘন্টা ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ এর দুই বৎসর পূর্ণ হলো গতকাল রোববার। ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোররাত থেকে সেই আতিয়া মহলে অভিযান শুরু হয়ে ৫ দিন পর সফলতার মুখ দেখে সেনাবাহিনীর সাহসিকতার মাধ্যমে।

২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোরে শুরু হয়ে ২৮ মার্চ ৫ দিন পর্যন্ত শিববাড়ির আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলে। প্রথমে আতিয়া মহল ঘেরাও করেছিল এসএমপি পুলিশ। পরে ঢাকা থেকে আসে সিআইডি বিশেষ বাহিনী ‘সোয়াট’ দল। কিন্তু চুড়ান্ত অভিযানে অংশ নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা। চৌকষ সেনা সদস্যরা সেই অভিযানের নাম দেয় ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। অভিযান শেষে আতিয়া মহল থেকে চার জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়।

কমান্ডোদের অভিযান চলাকালেই আতিয়া মহলের পাশেই একটি সড়কে দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন সাতজন। আতিয়া মহলে ৫ দিন ব্যাপী শ্বাসরুদ্ধকর জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং অভিযান চলাকালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল এসএমপির মোগলাবাজার থানায়।

মামলার তদন্তভার প্রথমে পুলিশের হাতে থাকলেও পরে তা স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে। পরে ১১ ও ১২ নং স্মারকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পিপিআইর পরিদর্শক আবুল হোসেন। ২৪ মার্চ ২০১৭ থেকে ২৪ মার্চ ২০১৯ দুই বৎসর অতিবাহিত হলেও নিহত ৪ জঙ্গির মধ্যে মাত্র ১ জনের পরিচয় সনাক্ত করেছে আইন শৃংখলা বাহিনী। বাকী ৩ জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে গতকাল রোববার এসএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ দক্ষিণ সুরমার আতিয়া মহলে জঙ্গী অভিযানের পর ‘দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপর পুলিশ কিছু সাক্ষ্য প্রমাণ ও আলামত সংগ্রহ করেছিল। সিআইডিও কাজ করছিল। পরে তদন্তভার উচ্চমহলের নির্দেশে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে বর্তমানে মালাটি তদন্তাধীন আছে।

সিলেট পিবিআই পিপিআই পরিদর্শক আবুল হোসেন জানান, ২০১৭ সালের মে মাসে মামলা দুটি আমরা পাই। এখনও তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ইতিপূর্বে আরো তিনজনকে দুটি মামলায় শ্যোন এ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। আর আতিয়া মহলে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মর্জিনার পরিচয় সনাক্ত করা হয়। আতিয়া মহলে প্রাপ্ত বিস্ফোরকের রাসায়নিক পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, এগুলো শক্তিশালী বিস্ফোরক ছিল। তিনি আরো জানান, খুব শিগগিরই দেয়া হবে চার্জশীট।

/পিবিডি/পি.এস

সিলেট,আতিয়া মহল,চার্জশিট

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close