• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রায়ের পরে কর্মসূচি বিএনপির, নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ধরার নির্দেশ

প্রকাশ:  ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০২:০৯ | আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘিরে কোনো কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। রায় যাই হোক না কেন, দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ধরার জন্য বার্তা পাঠিয়েছে বিএনপি শীর্ষনেতারা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণার পর আনুষ্ঠাকিভাবে প্রতিক্রিয়া এবং কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি।

বিএনপির শীর্ষনেতার মনে করছে. দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সিনিয়র নেতাদের এই মামলায় রাজনৈতিক কারণেই জড়ানো হয়েছে এবং নির্বাচনের আগে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়েই রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। এ কারণে বহুল আলোচিত এ গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ‘ফরমায়েশি’ হবে বলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা অভিযোগ করছেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় যাই হোক না কেন বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রিজভী।

মামলার রায় প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার পরপরই বিএনপির সরকার মামলা দায়ের করে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারকাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করে। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের অসহযোগিতা এবং তাদের কিছু ষড়যন্ত্রের কারণে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। ২০০৮ সালে অবৈধ সরকারও যে চার্জশিট দাখিল করেছিল সেখানে বিএনপি এবং এর নেতাকর্মীকে যুক্ত করা হয়নি। ২০০৮ সালে চার্জশিট দাখিল করার আগে মুফতি হান্নান যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছিলেন সেখানেও তারেক রহমান কিংবা ওই সময়ের প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার নাম বলেনি।

তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে তারেক রহমান ও বিএনপিকে এই মামলায় জড়ানোর জন্য তাদের নীলনকশার ইঙ্গিত দিতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুফতি হান্নানকে দ্বিতীয় দফা দীর্ঘদিন রিমান্ডে রেখে নির্যাতন করে তথাকথিত দ্বিতীয় স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেয়ার বিরল ঘটনা।

মওদুদ বলেন, বর্তমান সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য আদালতকে যেভাবে ব্যবহার করছে তার আরেকটি নগ্ন উদাহরণ ১০ অক্টোবরও হবে বলে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি।

গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এ মামলায় মোট ২২৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন, একজন সাক্ষীও বলেননি, তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ত। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এ ধরনের মামলা সাজানো হয়েছে। আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই, এ মামলায় যদি সাজা দেয়া হয় তা হবে ফরমায়েশি রায়, যা হবে ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

দলের চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে দেয়া এক ভাষণে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখে কারো ফাঁদে পা না দিয়ে ধৈর্য ও সাহসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাভাবিক কারণেই যেকোনো মানবিক ইস্যুতে দেশের মানুষ রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখতে চায় না।

এদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা মনে করছে, বর্তমানে গড়ে ওঠা সরকার বিরোধী আন্দোলনেরক্য বিনষ্ট করতে নানা রকম ফাঁদ পাতা হয়েছে। তাই সাহস এবং সতর্কতার সঙ্গে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যপয়ের একটি সূত্র জানায়, এ মুহূর্তে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে আন্দোলন ও নির্বাচনী দাবি আদায় করার লক্ষ্যেই সতর্কভাবে এগোচ্ছে দলটি। সুতরাং নতুন কোনো ইস্যুতে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে চায় না বিএনপির হাইকমান্ড। ২১ আগস্ট মামলার রায় বিপক্ষে গেলেও কঠোর কোনো কর্মসূচিতে যাবে না দলটি। সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল বা প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হতে পারে। খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার পর নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার যে নির্দেশনা ছিল, এই রায় নেতিবাচক হলে সেরকমই নির্দেশনা থাকবে বিএনপির।

এনই

রিজভী,মওদুদ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close