• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বন্ধে ভোজ্যতেলের দামে নতুন রেকর্ড

প্রকাশ:  ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৪০ | আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৪৯
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের জেরে মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেই ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় ৫ দিনের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে পাম অয়েল ও সয়াবিনের দাম বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশ্বজুড়ে পাম অয়েলের বিকল্প অন্যান্য তেলের সরবরাহ এমনিতেই অপ্রতুল। তার ওপর ইন্দোনেশিয়ার এ সিদ্ধান্তে সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) থেকে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। তার আগে পাঁচ কর্মদিবসের ব্যবধানে সয়াবিনের দাম লিটারপ্রতি ১১ টাকা ৪৩ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে পামওয়েলের দাম বেড়েছে লিটারপ্রতি ৮ টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে বিশ্বে পাম অয়েল রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৮১ লাখ টন। এই রপ্তানির ৫৬ শতাংশ বা ২ কোটি ৬৮ লাখ টনই করেছে ইন্দোনেশিয়া। মালয়েশিয়া রপ্তানি করেছে ১ কোটি ৫৮ লাখ টন, যা বৈশ্বিক রপ্তানির ৩৩ শতাংশ। বাকি ১১ শতাংশ রপ্তানি করেছে কয়েকটি দেশ মিলে।

সয়াবিন তেলের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ আর্জেন্টিনার রপ্তানি সীমিত করার ঘোষণায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি দামে। তবে গত ২২ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো নিজ দেশের বাজার সহনীয় রাখতে পাম অয়েল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় বুধবার (২৭ এপ্রিল) সিবিওটিতে টনপ্রকি সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৩৫ ডলারে। লিটারে এই দর বেড়েছে ১৫৯ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে পাম অয়েলের দরও। এসব তেল বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত আমদানি করতে হলে পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হবে।

ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ সূর্যমুখী তেল উৎপাদক ও রফতানিকারক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া দেশটিতে হামলা চালালে দেশটির সব ধরনের পণ্য রফতানিই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। কমতে থাকে সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ।

অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ সয়াবিন তেল সরবরাহকারী দেশ আর্জেন্টিনা। দেশটিতে খরার কারণে সয়াবিন তেলের উৎপাদন ভালো হয়নি। এতে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলটির দাম এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী।

শিল্পসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত বছর করোনা মহামারীর বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করলে খাদ্য ও বায়োডিজেল হিসেবে বাড়তে শুরু করে ভোজ্যতেলের চাহিদা। মূলত তার পরই বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের সংকট বাড়তে শুরু করে।

পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তেলবীজ মাড়াইকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। করোনার কারণে অন্তত এক বছরের বেশি সময় এসব প্রতিষ্ঠানে মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

ইন্দোনেশিয়ার দৈনিক দ্য জাকার্তা পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রপ্তানি বন্ধের কারণে ইন্দোনেশিয়ার প্রতি মাসে ১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হাতছাড়া হবে।

বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৩ লাখ টন পামওয়েল আমদানি হয়। এর ৯০ শতাংশ আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। মালয়েশিয়ার চেয়ে তুলনামূলক কম দামের কারণেই ইন্দোনেশিয়া থেকে বেশি পাম অয়েল আমদানি করা হয়। মালয়েশিয়া থেকে আমদানি হয় ১০ শতাংশ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় চাপ পড়েছিল সয়াবিন ও পাম অয়েলের ওপর। এখন ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় সব ধরনের ভোজ্যতেলের ওপর প্রভাব পড়েছে।

পূর্বপশ্চিম/এনএন

ভোজ্যতেল,ইন্দোনেশিয়া
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close