• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

অযোধ্যায় যাচ্ছেন না ৪ শঙ্করাচার্য, কারণ হিসেবে যা বললেন

প্রকাশ:  ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

অযোধ্যায় ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপির চোখে এই দল ও তাদের মতো যারা আমন্ত্রণ সত্ত্বেও হাজির হবে না, সবাই ‘সনাতন ধর্মবিরোধী’। সেই তকমা শঙ্করাচার্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কি না, প্রশ্নটি উঠে গেল। কেননা, দেশের চার শঙ্করাচার্যের কেউই ২২ জানুয়ারি অযোধ্যা যাবেন না। কারণ, তাঁরা মনে করছেন ওই দিন অযোধ্যায় যা হতে চলেছে, তা সনাতন ধর্মবিরোধী।

মাত্র কদিন আগে পুরী গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জানিয়েছিলেন, তিনি অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার উত্তরাখন্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী জানান, দেশের চার পীঠের চার শঙ্করাচার্যই ঠিক করেছেন ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার। হরিদ্বারে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় সনাতন ধর্মের লঙ্ঘন হতে চলেছে। চার শঙ্করাচার্যের কেউই সেখানে উপস্থিত থাকবেন না।

অভিমুক্তেশ্বরানন্দ বলেন, শঙ্করাচার্যরা চিরকাল সবাইকে সুষ্ঠুভাবে ধর্ম পালনের শিক্ষা দিয়ে এসেছেন। নিজেরাও যা কিছু করেছেন ধর্ম মেনেই। কিন্তু অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, যা কিছু তাঁরা করছেন, তা ধর্ম মেনে নয়। তাঁরা হিন্দু ধর্ম পরিপন্থী কাজ করছেন। সেই কারণে শঙ্করাচার্যরা তার সাক্ষী হতে পারবেন না। তিনি অবশ্য বলেন, কারও প্রতি তাঁদের কোনো বিদ্বেষ নেই।

অযোধ্যায় ২২ জানুয়ারির কর্মসূচি কেন হিন্দু ধর্মবিরোধী সেই ব্যাখ্যায় স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ বলেন, মন্দির তৈরি হওয়ার পরই বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অযোধ্যায় মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। অথচ রাম মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে। এটা হিন্দু ধর্মবিরোধী কাজ। তিনি বলেন, এত তাড়াহুড়া করার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। মন্দির তৈরির কাজ শেষ করার অনেক সময় রয়েছে। তারপর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা যেতেই পারে।

এই সিদ্ধান্তের জন্য তাঁদের ‘মোদিবিরোধী’ বলা হতে পারে, সেই প্রশ্নের জবাবে অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী বলেন, তাঁরা মোদি বা অন্য কারও বিরোধী নন। ধর্ম শাস্ত্রের বিরোধী এমন কিছু তাঁরা করতে পারেন না।

এর আগে পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী বলেছিলেন, স্কন্দ পুরান অনুযায়ী ধর্মীয় আচার ঠিকভাবে পালিত না হলে বিগ্রহে অশুভ শক্তি প্রবেশ করে।

অযোধ্যার মন্দির পুরোপুরি তৈরি হতে এখনো দুই বছর লাগবে। মন্দিরের গর্ভগৃহ ও প্রথম তলা তৈরি হয়েছে। অসম্পূর্ণ সেই মন্দিরে রাম মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে ২২ জানুয়ারি। লোকসভার ভোটের আগে হিন্দুত্ববাদী চেতনায় ঝড় তুলতে বিজেপি চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছে না। দেশজুড়ে প্রচার চলছে। দেশ-বিদেশ থেকে গণ্যমান্য অতিথিদের নিয়ে আসা হচ্ছে। চারদিকে সাজসাজ রব উঠে গেছে।

কংগ্রেস নেতৃত্ব ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, বিজেপি ও আরএসএস ভোট রাজনীতির স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করতে চাইছে। সে কারণেই অসম্পূর্ণ মন্দির উদ্বোধনে এত আগ্রহ। চার শঙ্করাচার্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার সঙ্গে কংগ্রেসের যুক্তির অদ্ভুত মিল। কংগ্রেসকে বিজেপি ইতিমধ্যেই ‘সনাতন ধর্মবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছে। শঙ্করাচার্যদের সিদ্ধান্তকে তারা কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?

ভারত,মন্দির
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close