• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

জাবিতে ময়লার ভাগাড়, জীববৈচিত্র্য হুমকিতে

প্রকাশ:  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮:৩০
সানভীর ইসলাম, জাবি প্রতিনিধি

গাছ-গাছালি, লেক, জলাশয়ে মাঝে তৈরি হওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এখানে মানুষের পাশাপাশি রয়েছে প্রাণীদের অবাদ বিচরণ। রয়েছে শেয়াল, কাঠবিড়ালি, সাপ, গুইসাপের মত নানা প্রজাতির প্রাণী। এছাড়াও শীতের আগমনের সাথে সাথে এখানে অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরি হয়। কিন্তু প্রতিনিয়তই এই স্বর্গরাজ্যটি যেন দিনে দিনে আবর্জনার ভাগাড় হয়ে উঠছে। যা বর্তমানে জীববৈচিত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন সংকট ও জনসচেতনতার অভাবে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে পরিবেশ। করোনা কালে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও থেমে থাকেনি বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ। বিভিন্ন সময়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের ফেলে যাওয়া ময়লা ক্যাম্পাসের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবারের প্যাকেট, দোকানের আবর্জনা, পলিব্যাগ, বোতল, খাবার মোড়ক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ক্যাম্পাসের আঙ্গিনায়। যা প্রাণীদের বিচরণে বাঁধা সৃষ্টি কর চলেছে। এছাড়া জলাশয় গুলোতে জমা হচ্ছে পলিব্যাগ ও প্লাস্টিক জাত দ্রব্য। যা জলজ উদ্ভিদ ও পানিতে বসবাস করা প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকটের ফেলে দিচ্ছে। হতাশার বিষয় এই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র বৈর্জ্য রিসাইক্লিং প্লান্টও অকার্জকর হয়ে আছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের বটতলা, টার্জান পয়েন্ট সহ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মোড়ে জমে আছে আবর্জনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল প্রাঙ্গণ, ফজিলাতুন্নেছা হলের নিকটবর্তী লেকের পাশে ময়লা জমে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ব্যাবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে অস্থায়ী দোকানের জমে থাকা ময়লা পানিতে ফেলা হচ্ছে। অথচ প্রসাশনের এ বিষয় দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।

পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. খবির উদ্দিন জানান, ‘যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে চলেছে। পানিতে ফেলা ময়লা আবর্জনার কারণে ইউট্রোফিকেশন হয়। যার প্রভাবে পানিতে অক্সিজেন আধিক্য দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে মাছ মারা যেতে থাকে। এছাড়া আবর্জনাগুলো সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি বিভিন্ন মশা, মাছি সহ বিভিন্ন রোগজীবাণুর পাদুর্ভাব ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া ফেলে দেওয়া ব্যাবহৃত মাস্ক থেকে কোভিডের মত রোগের পাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেতে পারে।’

এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রহমানের (এস্টেট) কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দোকানীদের ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে রাখা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বেপরোয়া ভাবে আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেললে তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিবো।

এছাড়া তিনি বলে, আমাদের পর্যাপ্ত ডাস্টবিন রয়েছে। তবুও প্রয়োজনে আমরা আরো ডাস্টবিন স্থাপনের উদ্যোগ নিবো। তবে কাজের এই মন্থর গতির জন্য তিনি লোক সংকটকে দায়ী করেছেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close