জাবিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি, শিক্ষক সমিতির নিন্দা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে ধর্ষণ ও স্বৈরাচারবিরোধী একটি গ্রাফিতি এঁকেছে ছাত্র ইউনিয়ন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। উপাচার্যের কাছে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানায় সংগঠনটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালের অক্টোবরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে দুর্নীতি বিরোধী ব্যাঙ্গচিত্র অঙ্কন করেছিল প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকারীরা। পরে ২০২০ সালের নভেম্বরে ওই ব্যাঙ্গচিত্রের ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি প্রতিকৃতি আঁকে ছাত্রলীগ।
সম্পর্কিত খবর
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বহিরাগত নারী ধর্ষণের ঘটনার পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে দিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ধর্ষণ বিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কন করেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জোগাতে এবং নিপীড়কদের হুঁশিয়ার করতে নতুন গ্রাফিতিটি আঁকা হয়েছে। প্রায় তিন বছর পার হওয়ায় আগের ছবি অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া পাশের দেয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশাল, স্পষ্ট এবং নান্দনিক গ্রাফিতি দৃশ্যমান রয়েছে। চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তিতে গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি মানতে নারাজ ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল। তিনি বলেন, ‘‘একটি কুচক্রী মহল ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতির পিতার প্রতিকৃতি মুছে ফেলেছে। গ্রাফিতিটি যারা এঁকেছে নিচে তাদের পরিচয় দেওয়া আছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।’’
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ধর্ষণ বিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কনের প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের সময়ে অত্যন্ত হীনম্মন্যতা নিয়ে রাতের আঁধারে এ নিকৃষ্ট কাণ্ডটি নিপীড়কদের রক্ষাকারী বা রক্ষার চেষ্টায় তৎপর কুচক্রীমহলের পরিকল্পনায় ঘটানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছি। তিনি তদন্ত কমিটি করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।’’
জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, ‘‘যারা এটি করেছে তাদের শনাক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে বলেছি। ডিসিপ্লিনারি বোর্ডে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’