• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রথম সার্জারী ক্যাম্প

প্রকাশ:  ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৩৪
সানজিদা জান্নাত পিংকি, গবি:

প্রাণ বাঁচাতে নিজ দেশ ছেড়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে উদ্বাস্তু হিসেবে জীবনযাপন শুরু হয় তাদের। পরবর্তীতে নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থাপন করা হয় ক্যাম্প।

ভাসানচরের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চিকিৎসার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ নেভীর অধীন ও তত্ত্বাবধানে নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং সিভিল সার্জন নোয়াখালীর তত্ত্বাবধানে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়।

হাসপাতালটিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গত নভেম্বরে সিভিল সার্জন নোয়াখালী ও আরআরআরসি অফিসের সার্বিক নির্দেশনায় ইউএনএইচসিআর এর সহযোগীতায় চার দিনব্যাপী অত্যাধুনিক সার্জারি ক্যাম্প সফলভাবে সম্পন্ন করে।

সাজার্রী ক্যাম্পটিতে গণস্বাস্থ্যের সাজার্রী বিশেষজ্ঞ দল হেমোরয়েড, এনালফিসার, হার্নিয়া, লাইফোমা, সারকামসেশন, ব্রেষ্ট এবসেস সহ বিভিন্ন সমস্যার ছোট-বড় মোট ৪৪ টি অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।

ভাসানচরে স্বাস্থ্য সেবার অংশ হিসেবে ২০ শয্যা হাসপাতাল কর্তৃক রেফারকৃত বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগী বিশেষ করে অপারেশনের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে নদীপথে জেলা শহর নোয়াখালী হাসপাতালে পাঠানো হতো; যা অনেক কষ্টকর, প্রতিবন্ধক, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবার কথা বিবেচনা করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাইরেক্টরের পরামর্শক্রমে এবং ভাসানচরে কর্মরত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র টিমের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এবং হেলথ কো-অর্ডিনেটর কক্সবাজারের ন্যায় ভাসানচরেও সার্জারী ক্যাম্প করার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা ঔষধের মাধ্যমে সুস্থ হচ্ছিলো না, যে সমস্ত রোগীর সার্জারী প্রয়োজন এবং দীর্ঘদিন যাবত রোগে ভুগছিল, এমন রোগীদের বাছাই কার্যক্রমে প্রাধান্য দিয়ে সার্জারী ক্যাম্পের জন্য ভাসানচরে কর্মরত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি মেডিক্যাল টীমের মাধ্যমে মাসব্যাপী রোগী বাছাই করণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সর্বমোট ৪৪ জন রোগী বাছাই করে চার দিন ব্যাপি সফলভাবে সার্জারী সম্পন্ন করা এবং সার্জারী পূর্ববর্তী ও পরবর্তী রোগীর ফলোআপ, ভর্তি, খাওয়া, ঔষধ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা সহ প্রয়োজনীয় সকল সেবা প্রদান করেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা: মনজুর কাদির আহমেদের সভাপতিত্বে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের হল রুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্যাম্পের কার্যক্রম শুরু হয়।

চার দিনব্যাপী ৪৪ জন রোগীর সফলভাবে সার্জারী সম্পন্ন করার পর সকল রোগী শতভাগ সুস্থ আছেন। সিভিল সার্জন নোয়াখালী এবং আরআরআরসি অফিসের সহযোগীতায় ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ইউএনএইচসিআর এর সহযোগীতায়, বাংলাদেশ নেভী এবং সিভিল সার্জন নোয়াখালীর অধীন অত্র ভাসানচরে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

হেমোরয়েড রোগে আক্রান্ত রোহিঙ্গা রোগী আনোয়ার শাহ্। তিনি বলেন, 'আরার একটা টুইট্যা বেরাইম্যা রোগ আছিলো। গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে টুইট্যা বেরাম ইগার অপারেশন কইর্যে। অপারেশন করিয়ারে আঁরা এখন বেশি আরাম পাইর। খুব ভালো আছি শুকরিয়া জানাইর গণস্বাস্থ্যের সকল ডাক্তাররে। এতারার উচিলায় আলহামদুলিল্লাহ এখন পুরাপুরি সুস্থ ওয়ে।'

সার্জারী ক্যাম্প,গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র,রোহিঙ্গা,কক্সবাজার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close