• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনে সোমবারের মধ্যে লিখিত প্রস্তাব দেয়ার নির্দেশ

প্রকাশ:  ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫৯ | আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৮
ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আয়োজনের অংশ হিসেবে দীর্ঘদিন অকার্যকর থাকা গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে বৈঠকে করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৈঠকে সময় স্বল্পতার কারণে আগামী সোমবারের মধ্যে সব সংগঠনের প্রতিনিধিদের লিখিত প্রস্তাব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে৷

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের কনফারেন্স হলে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷

ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে সংবিধান সংশোধন কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সব সংগঠনের সাথে কথা বলে প্রস্তাবনা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর সিন্ডিকেট বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে ১৩টি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। পরে বৈঠকের বিষয়ে তারা আলাদাভাবে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

বৈঠকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা নিজেদের সংগঠনের দাবিসমূহ তুলে ধরে। সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ থেকে ডাকসু নিয়ে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে, সেক্রেটারিয়েটের সংখ্যা বৃদ্ধি, নারী প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যাকেন্দ্রিক আলাদা সম্পাদকের পদ সৃষ্টি অন্যতম।

অন্যদিকে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা ও ক্যাম্পাসে সকল সংগঠনের নেতাকর্মীরা যেন সমান সুযোগ পায় সে বিষয়ে প্রস্তাব রাখা হয়।

বাম সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল করা (নিয়মিত) শিক্ষার্থীদের সদস্য রাখা, দীর্ঘদিন পরে নির্বাচন হচ্ছে বিধায় একটি নির্দিষ্ট সেশন পর্যন্ত শিক্ষার্থীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দান, সভাপতির ক্ষমতা হ্রাস, এবং সেক্রেটারীয়েট বডির সদস্যদের ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানা প্রস্তাবনা পেশ করে।

গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ঢাবির আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা ও শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা।

ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সাধারন সম্পাদক রাজিব দাস, ছাত্রলীগের (বিসিএল) ঢাবি শাখার সভাপতি চন্দ্রনাথ পাল, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রাহাত, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মন তমা, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীরসহ ১৩ টি ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বৈঠক শেষে অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের প্রস্তাবনা পেশ করেছে। তারা আগামী সোমবারের মধ্যে লিখিত প্রস্তাবনা জমা দিবে। এরপর বিষয়টি আমরা মাননীয় উপাচার্য বরাবর পেশ করব।’

বৈঠকের বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা বৈঠকে আমাদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেছি। আমরা চাই সকল সংগঠন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক৷ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা ক্যাম্পাসে আসছেন আড্ডা দিচ্ছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি তাদের মতাদর্শ গ্রহণ করে নেয় তাহলে তারা ক্যাম্পাসে আসতে পারবে, কেউতো তাদের বাধা দিচ্ছে না।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা মনে করি। সহাবস্থা্ন নিশ্চিত না হলে আমরা নির্বাচনে অংশ নাও নিতে পারি।'

ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বলেন, ‘ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্রে সভাপতিকে একচেটিয়া ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে পদাধিকার বলে সভাপতি (উপাচার্য) নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বহিষ্কার করতে পারবে। তিনি যে বিষয়ে চাইবেন সে বিষয়ই আলোচিত হবে। আমরা বিষয়গুলোর পরিবর্তনে প্রস্তাবনা রেখেছি। পাশাপাশি যেহেতু দীর্ঘদিন নির্বাচন হয়নি তাই আমরা একটি নির্দিষ্ট সেশন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বলেছি।’

পিবিডি/আরিফ

ডাকসু
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close