• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম আর নেই

প্রকাশ:  ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৫৪
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ‘প্রবাসীর কথা’ গ্রন্থের লেখক নূরুল ইসলাম (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিলো ৯১ বছর।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান নূরুল ইসলাম। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

নুরুল ইসলাম ‘প্রবাসীর কথা’ নামে সহস্রাধিক পৃষ্ঠার গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেছেন। ‘প্রবাসীর কথা’র লেখক হিসেবে ২০১২ সালে তিনি বাংলা একাডেমির ফেলোশিপ লাভ করেন।

এই গ্রন্থে প্রবাসের সুখ-দুঃখ, যাপিতজীবনের সুবিধা-অসুবিধা এবং দেশবাসীর কাছে চাওয়া-পাওয়ার কথা ফুটে উঠেছে। বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতির সংগ্রামগাথা জীবনকথা খুঁজে পেতে হলে এটি প্রথম এবং নির্ভরযোগ্য দলিল।

প্রবাসী অন্তপ্রাণ নুরুল ইসলাম ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যান। এরপর আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। নুরুল ইসলাম এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে অল্পদিনে ছাত্র ও সুধীমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

১৯৬৩ সালে ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অব পাকিস্তান অ্যাসোসিয়েশন ইন গ্রেট ব্রিটেন’ গঠনের অন্যতম প্রধান ছিলেন। পরের বছর ১৯৬৪ সালে ‘ইস্ট পাকিন্তান হাউজ’ প্রতিষ্ঠায়ও তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। আন্তর্জাতিক প্রচার তৎপরতার কৌশল নির্ধারণের জন্য বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য ১৯৬৬ সালে তিনি দেশে ফেরেন। পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীনতার নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেফতার ও পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে। ফলে যথাসময়ে লন্ডনে ফিরে যেতে পারেননি। এতে লেখাপড়ার ব্যত্যয় ঘটে।

লেখক ও গবেষক নুরুল ইসলাম তখন দেশ থেকে ছয়-দফা আন্দোলনের পক্ষে প্রচার তৎপরতায় সক্রিয় হন। তিনি ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে ৪ ও ৫ নম্বর সেক্টরের প্রতিনিধি দেওয়ান ফরিদ গাজীর (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা সম্পন্ন) একান্ত সচিব ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায়ে তিনি সচেষ্ট হন। বাংলাদেশ সরকারের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি আব্দুস সামাদ আজাদের সফরসঙ্গী হিসেবে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সাহায্যপ্রাপ্তির জন্য তার ইউরোপীয় বন্ধুদের মাধ্যমে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছেন।

১৯৭২ সালে প্রবাসীদের কল্যাণার্থে ‘প্রবাসী বাঙালি কল্যাণ বোর্ড’ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন হিসেবে প্রবাসী অন্তপ্রাণ নূরুল ইসলাম এই বোর্ডের সচিব হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সকল কাজ সম্পাদন করেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/অ-ভি

বীর মুক্তিযোদ্ধা,নূরুল ইসলাম,লেখক,মুক্তিযুদ্ধ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close