• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ,গনপরিবহণে ভাড়ার নৈরাজ্য

প্রকাশ:  ০৮ জুলাই ২০২২, ১৪:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগে গণপরিবহনে ‘ভাড়া ডাকাতি ও যাত্রী হয়রানি চলছে’ বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ঈদযাত্রায় গণপরিবহন সংকটকে পুঁজি করে সড়ক, রেল, নৌপথে জরুরি ভিত্তিতে ‘ভাড়া নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল, নৌপথের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শুক্রবার (৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সিটি সার্ভিসের বাসের ভাড়া কোনও কোনও পথে পাঁচ থেকে ছয় গুণ পর্যন্ত বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। উত্তরা থেকে সায়েদাবাদে ৫০ টাকার বাস ভাড়া ৩০০ টাকা নিতে দেখা গেছে। শ্যামলী থেকে গুলিস্তানে ৩০ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। ধানমন্ডি থেকে সদরঘাট ২৫ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, টার্মিনাল কেন্দ্রিক নয়-এমন পথেও যাত্রী প্রতি ওঠা-নামা ভাড়া কোনও কোনও বাসে ৫০ টাকা, আবার কোনও কোনও বাসে ১০০ টাকা আদায়ের নৈরাজ্য এখনও চলছে। নগরীর প্রতিটি লেগুনা সার্ভিসের ভাড়া কোথাও দ্বিগুণ আবার কোথাও তিনগুণ আদায় করা হচ্ছে। কেরানীগঞ্জের কদমতলী ও সদরঘাট থেকে গুলিস্তান পথে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরুত্বের পথে লেগুনা ভাড়া ১৫ টাকা আদায় করা হলেও এখন কখনও ৩০ টাকা, কখনও ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। নগরীর সব লেগুনা রুটেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে বলেও জানায় সংগঠনটি।

আর রিকশা ভাড়া তিন থেকে চার গুণ বাড়তি আদায় করা হচ্ছে উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশা গুলশান, বনানী, বাড়িধারা থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাতায়াত করা গেলেও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই পথে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত সিএনজি অটোকশার ভাড়া গুণতে হচ্ছে।

শুধু রাজধানীর নয়, দূরপাল্লার যাত্রাপথেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দাবি করে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-রাজশাহী, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি রুটে বিদ্যমান ভাড়া থেকে গন্তব্য ভেদে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অনুরূপভাবে ঢাকা-কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি প্রতিটি রুটে এমন ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় চলাচলকারী গণপরিবহণগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এই চিত্র অব্যাহত আছে।

পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী প্রতিটি রুটে বিভিন্ন নন ব্র্যান্ডের বাসে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়, খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের বাসগুলো বিদ্যমান ভাড়ায় যাত্রী বহন করলেও কোনও কোনও পথে যাত্রী সাধারণকে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও বেশি দূরত্বের টিকিট কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে করে শ্রমজীবী, কর্মজীবী, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছেন।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-বরিশালের বিভিন্ন নৌপথের ভাড়া আর্কষণীয় হারে কমানো হলেও শেষ সময়ে এসে এই পথেও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে ঠেকেছে। বাস ছাড়াও রেলে টিকিট কালোবাজারি, অনলাইনে টিকিট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা কারণে যাত্রী সাধারণের হাতে টিকিট পৌঁছাতে নির্ধারিত মূল্যের তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথেও এমন ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে যাত্রী সাধারণ এখন দিশেহারা। তাই জরুরি ভিত্তিতে এই ‘ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে’ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এআই

গণপরিবহন,ভাড়ার নৈরাজ্য
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close