• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সিনহা হত্যার দুই বছর: দ্রুত রায় কার্যকর চায় পরিবার

প্রকাশ:  ৩১ জুলাই ২০২২, ১০:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

সেই হত্যার ২ বছরে এসে মামলায় মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর চেয়েছেন সিনহার মা ও বোন।

নিহত সেনা কর্মকর্তার মা নাসিমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে ছিল আমাদের প্রাণের উৎস। যখনই সুযোগ পেয়েছে, মানুষের কল্যাণে এগিয়ে গেছে। যে নরপিশাচরা সিনহাকে হত্যা করে আমার বুক খালি করেছে, তাদের কোনো দিন ক্ষমা করব না। পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি।

‘প্রত্যাশা একটাই, যারা আমার ছেলেকে হত্যা করে বুক খালি করেছে, সেসব নামধারী নরকের কীটদের যেন দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বিচারের রায় কার্যকর হবে। এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে মানুষের জন্য। যেন আর কেউ এভাবে কোনো মায়ের বুক খালি করার দুঃসাহস না পায়।’

মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, উচ্চ আদালতে মামলাটি আপিলে রয়েছে। এ পর্যন্ত মামলা যতটুকু এগিয়েছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। এখন উচ্চ আদালতে দ্রুত শুনানি শেষে বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি আরও জানান, মামলার আসামিদের মধ্যে যারা খালাস পেয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

দ্রুত শুনানি শেষে ভাইয়ের হত্যার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন শারমিন।

দুই বছরে এসে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রায়ের পর বিচারিক আদালতের সব কাগজপত্র উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের পক্ষে হাইকোর্টে দুটি আপিলও করা হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তদের ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের কথা ছিল। তা হয়েছে কি না, জানা নেই।

‘স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের আপিলের শুনানিতে সময় লাগে। আদালত কখন শুনানি করে, তা দেখার অপেক্ষায় আছি, তবে গুরুত্বপূর্ণ এ মামলার শুনানি দ্রুত করা জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘বিচারিক আদালতের রায় উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে আশা করি। একটি আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার জাতি দেখবে।’

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ‘খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের মেয়াদ ৩১ জুলাই শেষ হচ্ছে। আপিলের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নই, তবে উচ্চ আদালতের কাছে আবেদন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের আপিলের শুনানি দ্রুত করে এর বিচার নিশ্চিত করা হোক।’

সিনহা নিহত হওয়ার পরদিন ১ আগস্ট এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি এবং রামু থানায় একটি মামলা করে।

সরকারি কাজে বাধা ও মাদক আইনে মামলা দুটি করা হয়। টেকনাফ থানায় করা মামলায় সিনহার সঙ্গী সাইদুল ইসলাম সিফাতকে আসামি করা হয়। রামু থানায় মাদক আইনে করা মামলাটিতে আসামি করা হয় নিহত সিনহার অপর সঙ্গী শিপ্রা দেবনাথকে।

একই বছরের ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ৯ পুলিশ সদস্যের নামে কক্সবাজার আদালতে হত্যা মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার তৎকালীন বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া ও এসআই টুটুল।

মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভুক্তের পর আদালত তদন্তভার দেয় র‌্যাবকে। একই সঙ্গে পুলিশের করা মামলা তিনটিও র‌্যাবকে তদন্তের আদেশ দেয় আদালত।

পূর্বপশ্চিম/ম

সিনহা হত্যা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close