ছুটিতে ভার্চুয়ালি অফিস করতে পারবেন না ওয়াসা এমডি

ঢাকা ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদ অনুমতি না দিলেও বোর্ডের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটাতে গিয়ে ‘অন ডিউটি’ থাকার আবেদন করেছিলেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। তার ছুটি মঞ্জুর হলেও সেখান থেকে অফিস করার আবেদন মঞ্জুর করেনি মন্ত্রণালয়। বোর্ডের সিদ্ধান্তের আলোকেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

তাকসিমের অনুপস্থিতিতে সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম সহিদ উদ্দিনকে এমডির অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ শাখা থেকে গত বুধবার ঢাকা তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের যে অনুমতিপত্র জারি করা হয় তাতে বলা হয়েছে, ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত অথবা যাত্রার তারিখ থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারবেন। চিকিৎসা এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান গত ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। ছুটির সময় অন্য কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে সেখানে ‘অন ডিউটি’-তে থাকবেন বলে উল্লেখ করেন। তার এই ‘ভার্চুয়াল অফিস’-এর আবেদন নাকচ করে দিয়েছিল ঢাকা ওয়াসা বোর্ড।

ছুটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সভায় সদস্যরা তাকসিমের অনলাইনে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন। সভায় তাকে দুই মাসের ছুটি দেয়া হয়। বোর্ডে সিদ্ধান্ত হয়, ওই দুই মাস তিনি পূর্ণ ছুটিতে থাকবেন, অনলাইনে কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। বোর্ডের ওই সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে তাকসিম এ খান পরে একই আবেদন করেন মন্ত্রণালয়ে।

গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পালন করা তাকসিম এ খানের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তিনি প্রায় প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্ট সময় সেখানে যান তাকসিম।

গত বছরের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই তিন মাস তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৯ সালের ১১ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।

ওয়াসা সূত্র জানায়, প্রতিবারই দেশের বাইরে যাওয়ার আগে একটি অফিস আদেশ জারি করে তার অনলাইনে অফিস করার বিষয়টি জানিয়ে যেতেন। একজনকে এমডির পক্ষে রুটিন দায়িত্ব পালন করতে বললেও যুক্তরাষ্ট্রে বসেই নথিপত্রে স্বাক্ষরসহ সব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

গত বছর তিন মাসের ছুটিতে থাকাবস্থায় তাকসিম এ খান ছুটিতে থেকেও নথিপত্রে স্ই করেন। আবার তার ছুটিতে থাকার কারণে মন্ত্রণালয় থেকে এমডির দায়িত্ব পাওয়া পরিচালক আবুল কাশেমও নথিপত্রে সই করেন। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়।