• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

১৫ দিন সময় দিয়েছি, এর পরে কঠোর ব্যবস্থা: আতিক

প্রকাশ:  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, খালের সীমানা নির্ধারণ করে পিলার বসানো হয়েছে। যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে, খালপাড়ের এই সীমানার বাইরেও তারা অবৈধভাবে স্থাপনা করছে। আজকে আমরা ভাঙতাম, যেহেতু ওনারা বলেছেন ভেতরে প্রচুর পশু রয়েছে, এই পশুদের সরানো চ্যালেঞ্জিং হবে। পশুগুলোও আমাদের সম্পদ তাই এর ক্ষতি করা ঠিক হবে না। আমি তাদের ১৫ দিন সময় দিয়েছি। এর পরে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচুর গরুর খামারি ব্যবসা করছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলো খামারগুলোর সব বর্জ্য খালে ফেলা হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন খালটি উদ্ধারের পর আমি গত বছর এই রামচন্দ্রপুর খাল পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম। এটি আবার গো-বর্জ্য এবং অন্যান্য বর্জ্য দিয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। ওনারা মনে করেছেন এরকমভাবেই চলবে। অবশ্যই পরিবেশকে মাথায় রেখে ব্যবসা করতে হবে।

তিনি বলেন, রামচন্দ্রপুর খাল একটি ঐতিহাসিক খাল ছিল। আমরা সেটি উদ্ধার করেছি। ময়লার কারণে খালটা আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখানে মাছের নয়, মশার চাষ হচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি, খামারের বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না করতে পারলে অন্য জায়গায় এই খামার স্থানান্তর করতে হবে। খালের সীমানার মধ্যে যে স্থাপনা আছে, তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে, খামারের গো-বর্জ্য ইটিপি ট্রিটমেন্ট করেই কেবল খালে ফেলা যাবে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কাজকে আমি পারমিশন দেব না।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, রাজধানীর বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ঢাকার আশপাশের ইটভাটা। গবেষণা অনুসারে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা ৫৮ শতাংশ দায়ী। এছাড়া সড়ক ও মাটি থেকে সৃষ্ট ধুলা দিয়ে ১৮ শতাংশ, যানবাহনের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোর জন্য ৮ শতাংশ ও অন্যান্য কারণে ৬ শতাংশ বায়ু দূষিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ধুলাবালি নিবারণে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অত্যাধুনিক স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে পানি ছিটাচ্ছে। দুটি স্প্রে ক্যানন ডিএনসিসি এলাকার মহাসড়কে পানি ছিটানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিএনসিসির আওতাধীন পুরো এলাকার মহাসড়ককে দুটি ভাগে ভাগ করে একদিন অন্তর অন্তর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দুটি মেশিন দিয়ে পানি ছিটানো হচ্ছে। মহাসড়ক ছাড়াও ডিএনসিসি এলাকার অন্যান্য সড়কগুলোতে ১০টি ওয়াটার ব্রাউজার দিয়ে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে দুইবার পানি ছিটানো হয়। নির্মাণাধীন সড়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বেশি পরিমাণ পানি ছিটানো হয়।

ঢাকার বায়ুদূষণ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের সিটি কর্পোরেশন থেকে নতুন যে টেন্ডার হবে, সেই টেন্ডারের মধ্যে যেন কমপ্লায়েন্স মেইন্টেন করে এমন একটি খাত ধরে কাজ করতে হবে। ঠিকাদার কে কমপ্লায়েন্সের জন্য তাদের বালু, পাথর ঢেকে রাখতে হবে, এ ধরনের একটা চুক্তি তাদের সাথে আমাদের করতে হবে। বড় বড় যে কনস্ট্রাকশনগুলো হচ্ছে, রাজউকের প্রতি আহ্বান বাসাবাড়ির যে কনস্ট্রাকশনগুলো হচ্ছে, সেগুলোর জন্য যেন একটি নোটিশ দেয় এবং মনিটরিং করে। সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাদের ঠিকাদারগুলোকে আমরা মনিটরিং করব।

তিনি মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা হাউজিং, বসিলা গার্ডেন সিটি, দয়াল হাউজিং এলাকায় কয়েকটি খামার পরিদর্শন করেন। খামারের সকল বর্জ্য খালে ফেলে পানিদূষণ ও পরিবেশের ক্ষতি করায় একটি খামারকে মেয়রের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন অঞ্চল-০৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ।

পরিদর্শন শেষে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সুযোগ-সুবিধার কথা ও সমস্যা জানতে স্থানীয় জনগণকে নিয়ে বসিলা কমিউনিটি সেন্টারে একটি মতবিনিময় সভায় অংশ নেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

আতিকুল ইসলাম,ডিএনসিসি,মেয়র,সময়,কঠোর
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close