• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ভুলে ভরা বাংলাভাষা, শুদ্ধ চর্চার সুযোগ কই!

প্রকাশ:  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০২:২৫ | আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:১১
বিপুল হাসান
ভুলে ভরা বাংলাভাষা

ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেওয়ার সেই অভূতপূর্ব ঘটনার ৭০ বছর পূর্ণ হচ্ছে এবার। এতো বছর পরও সময় কী হয়নি প্রশ্ন তোলার, রক্তে কেনা মাতৃভাষার বাংলার মর্যাদা কতোটা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি আমরা? বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা কি হচ্ছে আমাদের মাঝে? আমরা কতটুকু চেষ্টা করছি বাংলা বানানের শুদ্ধতা নিয়ে? কতটুকু গুরুত্বের সাথে সন্তানদের শিক্ষা দিচ্ছি বাংলা ভাষা? আজও সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন করতে পারিনি, এ গ্লানি আমাদের। বাংলাভাষা প্রমিত মান আর বানান রীতি নিয়ে বাদানুবাদেই আমাদের বেলা যায়, সাবর্জনীন কাজ কিছুই হয়নি।

ফেব্রুয়ারি এলেই ভাষাদরদি হয়ে্ উঠি আমরা। রাষ্ট্রভাষা বাংলার মান ও মর্যাদা নিয়ে কথা বলি, নির্ভুল বানানে বাংলা লেখার তর্কবিতর্কে মেতে ওঠি। মাস গেলে সব ভুলে গিয়ে ফের ভুলভালেই ডুবে থাকি।

চোখ মেললেই দেখা যায়, রাজধানীসহ দেশের সর্বত্রই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়ক, বাজার, ফুটপাত, যানবাহন ও বিলবোর্ডগুলোতে বাংলা ভাষার বিকৃতি ভুল বানানের ছড়াছড়ি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং এফএম রেডিওগুলোতে ভাষার মাসেও বিকৃত উচ্চারণে কথা বলা থামানো যায়নি। বিকৃত উচ্চারণ, বাংলার সঙ্গে বিদেশি শব্দের সঙ্গে কথা বলাটা অনেকের কাছে আধুনিকতার সংজ্ঞা। ইংরেজি ভাষার বানান ভুল হলে আমরা লজ্জিত হই বা আরেকজন হাসবে বা ভর্ৎসনা করবে, এই ভয়ে আমরা তটস্থ থাকি। খুবই যত্ন করে ইংরেজিটা শিখি। কিন্তু নিজের মাতৃভাষা বলে বাংলাকে অবহেলা করে শিখি, যত্ন নিয়ে শিখি না। যার ফলে বানানে, ভাষায় বা বাক্যবিন্যাস সম্পর্কে অযত্নের ছাপ থেকে যায়।

ভুল আর দুর্বোধ্য শব্দের ছড়াছড়ি সবখানে। ব্যানার, পোস্টার, সাইনবোর্ডে ছাওয়া এই রাজধানীতে ভুল বানান খুঁজতে বেগ পেতে হয় না। এদিক-সেদিক তাকালেই বাংলা বানানের দুর্দশা চোখে পড়বে। রাজনৈতিক দলের ব্যানার আর নির্বাচনী পোস্টারে ভুল বানানগুলো দেখলে সচেতন অনেকের কান্না পেয়ে যায়। পাঁচ লাইনের সরকারি প্রজ্ঞাপণে থাকে ১০টি বানান ভুল। পত্রিকায় পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে থাকে ভুলের ছড়াছড়ি। ভুলে ভরা বানানে প্রতিবাদলিপি প্রেরিত হয়েছে দৈনিক পত্রিকায়। প্রাথমিক বা মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও দেখা যায় ভুল। সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে সমাবর্তনে ভুল বানানের ফেস্টুন বাংলাভাষার বুকে এঁকে দেয় প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

বাংলা একাডেমি বানান রীতি প্রমিত করার উদ্দেশ্যে একটি অভিধান প্রকাশ করেছে, বেশ কয়েক বছর আগে। কিন্তু সেই অভিধানের ব্যবহারিক প্রয়োগ স্কুল, কলেজ বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা সচরাচর দেখতে পাই না। অভিধানটিতে বাংলা ভাষায় প্রচলিত বিভিন্ন শব্দের পরিবর্তিত এবং আধুনিক বানান ও বানান রীতি দেখানো আছে। সেই সাথে বিভিন্ন উৎস থেকে বাংলা ভাষায় আগত বিভিন্ন শব্দের বানান বিষয়ক আছে কিছু নিয়ম-নীতিও। এসব নিয়মের প্রতি সামান্য যত্মবান হলেই অনেক শব্দের বানান বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব।

লেখক: বার্তা প্রধান, পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ

পূর্বপশ্চিম- এনই

বিপুল হাসান,বাংলা ভাষা,ভাষার মাস
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close