৩২২ জনের নাম দেখে তামাশা মনে হচ্ছে
এবার সার্চ কমিটির কাছে আমলাদের নামের আধিক্য বেশি। এর কারণ হতে পারে নির্বাচন কমিশনে আমলাদের প্রয়োজনীয়তা আছে। যাঁকে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ প্রতিষ্ঠানে যেকোনো ধরনের লোক নিয়োগ দেওয়া উচিত হবে না।
আমি আগেও বলেছি, নির্বাচন কমিশনের প্রায় ১৭ লাখ লোককে ম্যানেজ করতে হয়। ১০ হাজার বিষয় ম্যানেজ করতে হয়। নির্বাচন কমিশনের আড়াই হাজার নিজস্ব কর্মকর্তা আছেন, তাঁদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হয়। এ ছাড়া আইন-কানুন বোঝার বিষয় আছে, উদ্ভাবনের ও দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্তের বিষয় আছে। এ বাস্তবতায় যেকোনো লোককে বসিয়ে দিলে তো হবে না।
সম্পর্কিত খবর
কিন্তু যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে হাস্যাস্পদ অনেক নাম আছে। আমি নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যত লেখাপড়া করেছি, তাতে এবার যে হ-য-ব-র-ল অবস্থা দেখছি, তাতে বিস্মিত না হয়ে পারিনি। মনে হচ্ছে, এটা নিছক চাকরি।
আমাকে একটা চাকরি দিন—এ ধরনের মনোভাব নিয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে নিজের নাম প্রস্তাব করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের জন্য সে ধরনের আবেগ-অনুরাগ যদি না থাকে তাহলে যাচ্ছেতাই ঘটনা ঘটতে পারে। আমি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পাওয়ার পর ওই পদের জন্য নিজেকে যোগ্য করে তুলতে অনেক পরিশ্রম করেছি। অনেক পড়াশোনা করতে হয়েছে, অনেক কিছু জানতে হয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে অভিজ্ঞতা নিতে হয়েছে। লোকে এখন যা কিছুই বলুক, ভুল-ভ্রান্তি থাকার পরও আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থার জায়গাটা তৈরির চেষ্টা করেছিলাম। আমরা নির্বাচনে সঠিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য পুলিশের আইজিসহ অন্য কর্মকর্তাদের ডেকে সতর্ক করে দিতে দ্বিধা করিনি।
এখন নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য ৩২২টি নাম যখন দেখি, তখন মনে হয় তামাশা হচ্ছে। তার পরও সার্চ কমিটিকে আমরা বলে এসেছি সৎ, বদ যাঁরাই তালিকায় থাকুন না কেন, আপনারা এমন লোকদের নাম প্রস্তাব করেন, যাঁদের নির্বাচন কমিশনের যে আড়াই হাজার জনবল আছে তারা যেন অন্তত সম্মান করতে পারে।
সেনাবাহিনীতে একটা কথা বলা হয়, আপনার কাছে ক্ষমতা আছে, আপনাকে আমি স্যালুট করব। কিন্তু আপনার এই ক্ষমতাও থাকতে হবে যে আপনাকে আমি মন থেকে স্যালুট করব।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার