• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

গাফফার চৌধুরীর মরদেহ দেশে এনে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হোক

প্রকাশ:  ১৯ মে ২০২২, ১৮:৪৮
যিকরু হাবিবীল ওয়াহেদ

অমর একুশের গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী আমাদের মাঝে আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) লন্ডনের স্থানীয় সময় আনুমানিক সকাল ৭টায় যুক্তরাজ্যের লন্ডনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান।

কিংবদন্তি আবদুল গাফফার চৌধুরী ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা। যে গানের পরতে পরতে রয়েছে মায়ের ভাষার প্রতি অসম্ভব গভীর মায়া। যে গানটি ভাষা আন্দোলনের অংশবিশেষ হয়ে টিকে আছে আজ অবধি। গানটি বাজলেই মনে হয় ভাষার কথা মায়ের কথা মাটির কথায় যেন গাওয়া হচ্ছে। এ গানটি যেন বাংলার প্রতিটি বালি কণায় মিশ্রিত। প্রতিজন বাঙালির হৃদয়ে গভীরভাবে যেন প্রোথিত।

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামে। তিনি ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে পাড়ি জমিয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের লন্ডনের মিডলসেক্সে এজোয়ার এলাবার এলাকার মেথুইন রোডে বসবাস করতেন।

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর লেখালেখি এবং সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর ছাত্রজীবনে। ১৯৪৯ সালে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সম্পাদিত মাসিক সওগাত পত্রিকায় তার গল্প প্রকাশিত হয়। তাছাড়া ঢাকা কলেজের ছাত্র থাকাকালে যোগ দেন দৈনিক ইনসাফ পত্রিকায়। ১৯৫৬ সালে যোগ দেন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সম্পাদিত দৈনিক ইত্তেফাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।

আবদুল গাফফার চৌধুরী ইউনেস্কো পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ অসংখ্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন।

কিংবদন্তি আবদুল গাফফার চৌধুরী দলকানা না হয়ে খুব সুন্দরভাবে আওয়ামী লীগ এবং সরকারের দোষ তুলে ধরতেন যুক্তি সহকারে। ভুল হলে বলার এবং লেখার মাধ্যমে শুধরে দিতেন। দেশের মঙ্গলার্থে এমপি মন্ত্রী এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গঠনমূলক সমালোচনা করতেও পিছপা হতেন না জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরী।

সুদুর প্রবাসে থাকলেও জীবদ্দশায় জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরী দেশকে ভালোবেসে গেছেন প্রাণ উজাড় করে।এককথায় দেশ সত্যিকারের একজন বন্ধু অভিভাবক হারিয়েছে।

জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান আর কখনোই স্বশরীরে ফিরবেন না আমাদের মাঝে। চলে গেছেন অনন্তলোকে।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর প্রয়াণ দিবসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন, অমর একুশের গানের রচয়িতা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ দেশে এনে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হোক।

বাংলা মায়ের খাঁটি সন্তান মায়ের বুকে শায়িত থাকুক।

লেখক: সংগঠক ও কলামিস্ট

পূর্বপশ্চিম- এনই

যিকরু হাবিবীল ওয়াহেদ,আবদুল গাফফার চৌধুরী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close