• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মন বদলালেই দেশ বদলাবে

প্রকাশ:  ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৫২
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী

বর্তমানে অর্থনীতির সঙ্গে মানবিক প্রগতির কথা বলা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলছেন। কিন্তু যেটিই বলা হোক না কেন, সেটির প্রয়োগ সমাজ বা রাষ্ট্রে সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা, তা ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।

এর কারণ হচ্ছে, এখন যেভাবে উন্নয়নের ধারণা প্রচলিত আছে- তা অনেকটা ম্যাটারিয়ালিস্টিক; যেখানে মানুষের মনকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং ব্যবসায়িক বা কৃত্রিম দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ফলে মানুষের ভেতরে যে ভাবনা সৃষ্টি হওয়ার কথা তা কোনোভাবেই হচ্ছে না। আর ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে না বলে মানবিক যে গুণাবলীগুলো নিয়ে মানুষের বেড়ে উঠার কথা ছিল, তা বাস্তবে দেখা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত খবর

    আবার অনেক ক্ষেত্রে মানুষ অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। নিজের মনোভাব বা মানবীয় গুণাবলী ধারণ করে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। এ পরিবর্তনের প্রভাব সমাজ ও রাষ্ট্রকে কিভাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করছে, সে বিষয়গুলোও ভাবতে হবে।

    এখানে একটি বিষয় বলা যায়, স্বল্পমেয়াদে মানুষের মধ্যে এ ধরনের মনোভাব গড়ে উঠেনি, বরং দীর্ঘমেয়াদে সমাজের বিভিন্ন স্তরে নেতিবাচক মানবিক ভূমিকা এ ধরনের অবস্থা তৈরি করেছে। যেমন এক্ষেত্রে সততা ও নৈতিকতার বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে।

    একটি কথা প্রায়ই বলা হয়ে থাকে, এখন মানুষ আর আগের মতো নেই। এখানে মানুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব যে আগের মতো নেই সেই বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। অথবা অন্যভাবে বলা যায়, মানুষ ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়ে তার যে মানবিক আচরণ করার প্রয়োজন ছিল, তা তার মধ্যে কোনোভাবেই কাজ করছে না। ফলে তার কাছে কোনটি ভালো, কোনটি মন্দ- তা বিচার করার মানবিক গুণাবলী বজায় থাকছে না।

    যেমন অবৈধ উপার্জন যে একটি মন্দ কাজ, মানুষ তা বুঝে উঠতে পারছে না অথবা সেটি বোঝার মতো শক্তি তার থাকলেও সেটি তার মনকে প্রভাবিত করছে না। এ ধরনের অসততাকে সে জীবনের অংশ বলে মনে করছে।

    আবার এ অসততাকে গ্রহণযোগ্য করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি তুলে ধরছে। কিন্তু এর দ্বারা যে দীর্ঘমেয়াদে সমাজ ও রাষ্ট্র নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাবকে পরিবর্তন করছে, তা নিয়ে খুব একটা ভাবা হচ্ছে না।

    বর্তমান সময়ে মাদকের বিষয়টি সমাজের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে নেতিবাচকভাবে ক্রিয়াশীল হয়েছে। এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবেশ করে মানুষের চিন্তাশক্তি ও স্বকীয়তা ধীরে ধীরে নষ্ট করে ফেললেও তার মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা ও সমাধানের কোনো পরিকল্পনা বা নীতি গ্রহণ করা যাচ্ছে না।

    এর কারণ হল মানুষের মনের ভেতর যে সুপ্ত চেতনা রয়েছে, তার প্রকাশ ঘটছে না। অনেকেই মাদককে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা না করে বরং এটিকে তার ব্যবসায়ের অংশ মনে করছে। তার এ মাদক ব্যবসায়ের কারণে সামাজিক অবক্ষয় যেমন ঘটছে, তেমনি মাদকের ছোবলে তার পরিবারও যে আক্রান্ত হতে পরে- সে বোধশক্তি তার মধ্যে কাজ করছে না।

    সম্প্রতি প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি খুব বেশি আলোচিত হচ্ছে। এখানে একজন অন্যজনকে দোষারোপ করে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টিকে গৌণ করে তুলেছে। কিন্তু যদি গভীরভাবে বিষয়টি আমরা চিন্তা করি, তাহলে দেখা যায়- এক্ষেত্রে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রভাব যতটা, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়।

    এ অবক্ষয় একদিনে হয়নি বরং দীর্ঘদিন মানুষ মন্দ কাজকে মেনে নিতে নিতে এক সময় তার মনের পরিবর্তন হয়েছে এবং যে পরিবর্তন ইতিবাচক না হয়ে নেতিবাচকভাবে তার আচরণকে প্রভাবিত করেছে।

    এর ফলে মানুষ তার নৈতিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধকে গুরুত্ব না দিয়ে অসততাকে প্রাধান্য দিয়েছে। তার কাছে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি যে মন্দ কাজ সে ধরনের মনোভাব গড়ে উঠেনি। এর ফলে প্রশ্ন ফাঁসের মতো অবাঞ্ছিত ঘটনার অবতারণা ঘটছে।

    এ প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে কেবল এক বা দু’জন ব্যক্তিকে দায়ী করা ঠিক নয়, বরং তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের মনের ওপর নেতিবাচক শক্তি ক্রিয়াশীল হয়ে উঠেছে বলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রশ্নপত্রের সঙ্গে যুক্ত ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে এর জন্য কে দায়ী- তা অনেক ক্ষেত্রে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

    কিন্তু একটি বিষয় খুব পরিষ্কার, তা হল- মানুষের মধ্যে সততা, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধের সংকট দেখা দিচ্ছে। আর মানুষের মধ্যে যদি এ ধরনের মানবিক সংকট দেখা দেয়, তবে তা থেকে উত্তরণ প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। এজন্য দরকার মানুষের মনকে প্রভাবিত করে এমন ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তা না হলে যত উচ্চমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক না কেন, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

    আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, তা হল- মানুষের মধ্যে বাস্তবতা কাজ না করে ইদানীং কল্পনাশক্তি কাজ করছে। ফলে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা না ঘটলেও তার কাল্পনিক প্রচারণা মানুষের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে।

    অনেকে ভাবছেন, শিক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবর্তন হলেই প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি রোধ করা যাবে। কিন্তু এ ধরনের ভাবনা অনেকটাই অযৌক্তিক ও কল্পনাপ্রসূত। কারণ একজনের পরিবর্তে অন্যজনকে শিক্ষার দায়িত্ব দেয়া হলে যে একই ধরনের ঘটনা ঘটবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

    কারণ এখানে মানুষের চেয়ে মানুষের মনের প্রভাব অনেক বেশি। যতক্ষণ পর্যন্ত না সমাজের সর্বস্তরে মানুষের নেতিবাচক আচরণকে প্রভাবিত করে ইতিবাচক আচরণে পরিবর্তন করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের অসততার বিষয়গুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘটতেই থাকবে।

    দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে কোনো একটি সমস্যার জন্য অযৌক্তিকভাবে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করে। দোষারোপের সংস্কৃতি যেখানে যত বেশি প্রবল, সেখানে তার সমাধান ও উত্তরণের সংস্কৃতিও তত বেশি দুর্বল।

    মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেভাবে কৃত্রিম অভিনয় করে চলেছে, সেটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। যেমন শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকদের শিক্ষাদানের দায়বদ্ধতার বিষয়টি বারবার উচ্চারিত হচ্ছে। অনেকে বলে থাকেন- আগে যে ধরনের প্রথিতযশা ও গভীর জ্ঞানসম্পন্ন ভালো মানের শিক্ষক ছিলেন, আজকাল তেমনটি আর দেখা যাচ্ছে না।

    বিষয়টি অনেকাংশেই সত্য। কারণ আগে যারা শিক্ষকতা করতেন, তাদের মধ্যে জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা ছিল, যা বর্তমানে নেই বললেই চলে। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যেও জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের চেয়ে বাণিজ্যিকীকরণের মনোভাব গড়ে উঠেছে। ফলে শিক্ষা ও গবেষণায় যেভাবে শিক্ষকদের সম্পৃক্ত হওয়ার কথা ছিল, তা অনেকাংশেই কমে যাচ্ছে।

    এর বদলে শিক্ষক নিজেকে শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এক ধরনের কৃত্রিমতাকে বেছে নিচ্ছেন। এটি কেবল শিক্ষকদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে মানুষ তার নিজস্ব দায়িত্ব ও নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে এ ধরনের অভিনয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।

    আশঙ্কার বিষয় হল, স্বল্পমেয়াদে এর প্রভাব পরিলক্ষিত না হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি যে সমাজকে গ্রাস করতে পারে, তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে না।

    আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। জঙ্গিবাদের মতো নেতিবাচক একটি উপাদান আমাদের সমাজের মধ্যে প্রবেশ করেছে। এর প্রধান কারণ হল, কোনো মানুষের মন তার নিজের নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে তা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। ফলে ব্যক্তিত্ব ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠার মতো পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। জঙ্গিবাদ যে একটি মন্দ বিষয়, এ বোধশক্তিও অনেক মানুষের মধ্যে কাজ করছে না।

    বর্তমানে সমাজের মধ্যে যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে বা তৈরির চেষ্টা চলছে, তার প্রধান কারণ হল- মানুষের মন ধীরে ধীরে নেতিবাচক শক্তি দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। কারণ ইতিবাচক শক্তির দৃষ্টান্ত সমাজে বিদ্যমান থাকলেও তা প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে মানুষের মনকে ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন করার পদক্ষেপ তেমন একটা নেই বললেই চলে।

    কিন্তু নেতিবাচক প্রচারণাগুলো ইতিবাচক প্রচারণার চেয়ে প্রাধান্য পাওয়ায় এক সময় মানুষের মন ইতিবাচক থাকলেও তা ধীরে ধীরে নেতিবাচক ধারণাকে গ্রহণ করছে। এখন দরকার মানুষের মন নিয়ে গবেষণা করা। মানুষের মনকে কিভাবে প্রভাবিত করে ভালো-মন্দ বোঝার শক্তি তৈরি করা যায়, তা গভীরভাবে ভাবতে হবে।

    এ অবস্থার অবসানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সরকারি উদ্যোগ থাকা জরুরি। ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার নীতি ও উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য মানবিক পরিবর্তনের নীতিমালা জাতীয়ভাবে গৃহীত হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়গুলো মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। যেমন অনেকেই ভেবেছিলেন, সরকার ও রাষ্ট্র নিজ শক্তিতে পদ্মা সেতু গড়ে তুলতে পারবে না।

    কিন্তু নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু গড়ে তোলার ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। বিষয়টিকে কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। এখানে একটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে গেছে তা হয়তো অনেকেই ধারণা করতে পারেনি। এটি হল, প্রধানমন্ত্রীর এ ইতিবাচক মনোভাব জনগণের মধ্যেও ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।

    বিশ্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে বিচক্ষণ নেতা বিবেচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্সের বিগত ৫ বছরে রাজনীতিকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতার ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় শেখ হাসিনাকে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সেরা নির্বাচিত করা হয়েছে।

    গবেষণা সংস্থা পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মোট ৫টি বিষয় বিবেচনা করেছে। এগুলো হল- ১. কত স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ২. সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি কতটা সঠিক বিবেচিত হয়েছে ৩. গৃহীত সিদ্ধান্ত মানবকল্যাণে কী ভূমিকা রেখেছে ৪. সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া কী হয়েছে এবং ৫. সিদ্ধান্তের ফলে বিদ্যমান সমস্যার ক্ষেত্রে কী ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে।

    পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্সের গবেষণায় দেখা গেছে, গত ৫ বছরে বিশ্বে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের গৃহীত সেরা ৫টি সিদ্ধান্তের মধ্যে সবচেয়ে বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ছিল- রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭’র আগস্ট মাসে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেন।

    পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্সে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে যোগ্য সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে বিবেচনার প্রেক্ষাপট হিসেবে বলা হয়েছে- ‘রোহিঙ্গা ইস্যু বিশ্বে মানবতার এক সংকট সৃষ্টি করত।

    কিন্তু শেখ হাসিনার মানবিক, বিচক্ষণ এবং সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্ব এক মানবিক সংকট থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পায়।’ শুধু রোহিঙ্গা ইস্যু নয়, পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্সের গবেষণায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও কিছু সাহসী, বিচক্ষণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত উঠে এসেছে। এর মধ্যে নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে। জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স সিদ্ধান্তকে অনুকরণীয় এবং দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

    এসব মানুষের মনকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অ্যাঙ্গেলা মারকেল, যুক্তরাজ্যের ডেভিড ক্যামেরন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে আছেন।

    এটি যেমন আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়, তেমনি এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে- আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার ইতিবাচক মনোভাব ও কাজের মাধ্যমে রাষ্ট্রের জনগণের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। এখন দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মানুষের মনের পরিবর্তন। এটি যদি করা যায়, তবেই সমাজের সর্বস্তরে মানবিক প্রগতির ধারণা সৃষ্টি করে মানুষকে পরিবর্তন করা সম্ভব। আর ইতিবাচকভাবে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমেই জনগণের সম্মিলিত শক্তিতে উন্নত রাষ্ট্র গড়ে তোলা যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

    লেখক: শিক্ষাবিদ, কলামিস্ট, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

    /পিবিডি/একে

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close