• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নওগাঁয় টিকার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়

প্রকাশ:  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৩০ | আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৩৯
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর রাণীনগরে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশন ও সনদপত্র দেওয়ার নাম করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ২১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয় আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়।

অভিযোগ, ইতোমধ্যে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে টিকার রেজিস্ট্রেশন ও টিকার সনদপত্র প্রদানের খরচ হিসেবে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা করে নিয়েছে শিক্ষকরা।

শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে কোনো টাকা না নেওয়ার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। অথচ সেই নির্দেশনা না মেনেই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, টিকার সনদপত্র প্রদানের খরচ হিসেবে তাদের কাছ থেকে ১০-২০টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য এবং টিকাকেন্দ্রে যেতে যাতায়াত খরচ বাবদ ওই টাকা লাগবে বলেও জানায় শিক্ষকরা।

টাকা নেওয়ার পর বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য কঠোরভাবে হুশিয়ারি প্রদান করা হয়েছেও বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফুর জানান, পূর্বাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দূরবর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে টিকা গ্রহণ অনেক কষ্টসাধ্য হওয়ায় টিকা প্রদানের জন্য আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। টিকা প্রদান সংশ্লিষ্ট খরচ কয়েকটি স্কুল তার নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা না তোলার বিষয়েও কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

অভিযুক্ত আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, টিকার রেজিস্ট্রেশন ও সনদপত্র বের করতে কিছু টাকা খরচ হয়। সেই খরচের কিছুটা দিতে শিক্ষার্থীদেরকে বলা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কাউকে এক পয়সাও তোলার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ওই কেন্দ্রে টিকা প্রদানের জন্য যাবতীয় খরচের ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি কিন্তু ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কার নির্দেশে এমন জঘন্যতম কাজ করলেন সেই বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে.এইচ.এম. ইফতেখারুল আলম খাঁন অংকুর বলেন, টিকা ও টিকা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম আমার বিভাগ সরবরাহ করবে আর কেন্দ্র নির্ধারণ ও কেন্দ্রের যাবতীয় খরচের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে উপজেলা প্রশাসন এবং শিক্ষা বিভাগ। ওই কেন্দ্রে আমার লোকেরা অনেক কষ্ট করে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠভাবে যত্ন সহকারে টিকা প্রদান করেছে। সরকার বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের টিকা দিচ্ছে আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যে অসৎ শিক্ষকরা টাকা নিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে টিকা রেজিস্ট্রেশন বা টিকা নেওয়ার জন্য যাতায়াত খরচ কিংবা ভিন্ন নামে কোনো প্রকার টাকা আদায়ের নিয়ম নেই। এমন জঘন্য কাজ যারা করেছে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এএন

আদায়,টাকা,শিক্ষার্থী,নওগাঁ,টিকা,করোনাভাইরাস

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close