অভিযানেও থামেনি মুহুরী নদীর চরের মাটি কাটা
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় প্রশাসনের অভিযানের পরও অবাধে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি এবং মুহুরী নদীর চরের মাটি-বালু। তবে এসব মাটি ও বালু নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথমে বাঁধা দিলেও পরে তা আর চোখে পড়ছে না। এছাড়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম গুলোতেও রাতদিন চলছে অবাধে মাটি কাটা। এতে একদিকে যেমন ফসলি জমির উর্বর শক্তি হারাচ্ছে তেমনি অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি। স্থানীয়দের অভিযোগ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসব মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত।
গত ২০ জানুয়ারি অবৈধভাবে মুহুরী নদীর চরের মাটি ও বালু কাটার অপরাধে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী মাসুদ ও ইব্রাহিম নামে দুজনকে প্রশাসন দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। এর আগে ফসলি জমির মাটি কাটার অপরাধে যুবলীগ নেতা রাজিমকে ৮০ হাজার টাকা, কুতুবপুরের ইদ্রিসকেও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন স্থানীয় প্রশাসন।
সম্পর্কিত খবর
ফুলগাজীর বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, একসময় মাটি ব্যবসায়ীরা রাতের অন্ধকারে মাটি কাটলেও এখন রাতদিন সমানে মাটি কাটছেন। এসব মাটি ব্যবসায়ীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোন ভাবেই ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না। রাতের আঁধারে এসব মাটি ট্রাক ভর্তি করে ইটভাটা থেকে শুরু করে আশপাশের বাড়িঘর নির্মাণের জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। এতে প্রতি ট্রাক মাটি বিক্রি করা হয় ১২শ থেকে ১৫শ টাকা। তবে প্রথমদিকে প্রশাসনের অভিযান চোখে পড়লেও পরে তা আর চোখে পড়ছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, যেভাবে ফসলি জমির মাটির উপরিভাগের অংশ কেটে নিচ্ছেন, সেক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছরে এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে বড়ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম জানান, ‘আওয়ামী লীগের লোকেরাই কেবল মাটি কাটছেন তা সঠিক নয়। হয়ত ধরা পড়লে নিজেকে বাঁচার জন্য আওয়ামী লীগের লোক বলে পরিচয় দেন।’
জানতে চাইলে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসী বেগম বলেন, অনেক সময় আমরা পৌছানোর আগেই জড়িত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। তবে জমির উপরিভাগ (টপ সয়েল) কেটে নেয়ার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মুহুরী নদীর চরের মাটি ও বালু কাটার বিষয়ে কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস