• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

বক-পানকৌড়ির ঠাঁই হয়েছে মোস্তফার ওয়ার্কশপে

প্রকাশ:  ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৬:৪৫ | আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৬:৫৩
বরগুনা প্রতিনিধি

ঝড়-বাতাসে বাসা থেকে পড়ে যাওয়া বেওয়ারিশ বক ও পানকৌড়ির ছানাদের ঠাঁই হয়েছে ওয়ার্কশপে। হাতুড়িপেটার বিকট শব্দ ও চোখ ঝলসানো ঝালাইয়ের আলোকচ্ছটার মধ্যেও পরম মমতায় বড় হয় ছানাগুলো। এরপর অবমুক্ত করা হয় বনে। বরগুনা তালতলী উপজেলার মোস্তফা ওয়ার্কশপের মেকানিক গোলাম মোস্তফা এসব বেওয়ারিশ ছানার অভিবাবক হিসেবে পরিচিত।

মোস্তফার ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, অতীতে বড় করা পাখিগুলো বনে অবমুক্ত করলেও বর্তমানে তার ওয়ার্কশপে রেড়ে উঠছে একটি পানকৌড়ি ও দুটি বকের বাচ্চা। পাখিগুলো সব সময় মুক্ত অবস্থায় থাকে। তার দোকান ও আশপাশের এলাকায় ঘুরে ফিরে কাটে পাখিদের দিন। ঝালাইয়ে সৃষ্ট আগুনের ফুলকির মধ্যেও পরম যত্নে বেড়ে উঠছে পাখির ছানাগুলো। তবে এলাকার কেউ যাতে পাখিদের কোনো ক্ষতি করতে না পারে তাই পাখিদের গায়ে লাল রং লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। যাতে পাখি দেখেই সবাই বুঝতে পারেন, এই পাখি মোস্তফার ঘরে বেড়ে ওঠা পাখি।

ওয়ার্কশপ মেকানিক গোলাম মোস্তফা বলেন, ওয়ার্কসপের কাজের পাশাপাশি মাঝে মধ্যে তালতলীর নদী ও সমুদ্র উপকূলের জঙ্গলের মধ্যে ছোট খালগুলোতে মাছ ধরি আমি। ঝড়ে-বৃষ্টিতে মাঝে মাঝে জঙ্গলের গাছে থাকা পাখির বাসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় পাখির বাসা থেকে বাচ্চাগুলো নিচে পড়ে যায়, কখনো কখনো বাসা ভেঙে যায়। তখন মা পাখি বাচ্চাগুলোকে আবারো বাসায় নিতে পারে না। এমন বাচ্চাগুলো কুড়িয়ে পেলে আমি নিয়ে আসি। আমার ওয়ার্কশপে ঘরের পেছনে নির্মাণ করা বাসায় স্থান হয় সেই পাখির বাচ্চাগুলোর। পাখিদের খাবার জোগাতে ওয়ার্কশপের কাজের ফাঁকে খাল থেকে মাছ ধরে আনি।

তিনি আরও বলেন, এর আগে আমি কয়েকটি পাখির বাচ্চা বড় করে ছেড়ে দিয়েছি। তারা নতুনভাবে জীবন শুরু করেছে। এবারের বকের বাচ্চাগুলোও উড়তে শিখলে তাদের বনে ছেড়ে দেই। কিন্তু তারা উড়ে না গিয়ে আবার ওয়ার্কশপে ফিরে আসে। এখন সবসময় এখানেই ছাড়া অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুস সালাম, মোস্তাফিজ ও রুবেল বলেন, তালতলী বাজারে কোনো কাজে আসলে মাঝে মধ্যেই চোখ পড়ে মোস্তফার পাখিগুলোর দিকে। দেখা যায় মোস্তফা বকের বাচ্চা বা পানকৌড়ির বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছেন। বাচ্চাগুলো যদি মোস্তফার চোখে না পড়তো তাহলে হয়তো জঙ্গলেই মারা যেত অথবা অন্য পশুর শিকারে পরিণত হতো। এমন পাখিপ্রেমের কারণে মোস্তফার জন্য শুভ কামনা।

এ বিষয়ে তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমরা এ সম্পর্কে খোজঁখবর নিয়ে দেখছি। বন্যপ্রাণী রক্ষায় তালতলীতে আমাদের কিছু স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। মোস্তফা সেই স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে কেউ না হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরগুনা,বক-পানকৌড়ির,ওয়ার্কশপ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close