রাঙ্গামাটিতে ‘অজ্ঞাত রোগে’ পাঁচজনের মৃত্যু
রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামে “অজ্ঞাত রোগে” পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত গ্রামটির ১৪ বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথম মৃত্যু হয় ১০ জানুয়ারি।
রাঙ্গামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গ্রামটিতে জানুয়ারি মাসে দুইজন, ফেব্রুয়ারিতে দুইজন এবং মার্চে এ পর্যন্ত একজন মারা গেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভূষণছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য প্রীতিশংকর দেওয়ান ও গ্রাম প্রধান (কার্বারি) শিব রতন চাকমা।
সম্পর্কিত খবর
ঢাকা ট্রিবিউনকে তারা বলেন, “জানুয়ারি মাস থেকে গ্রামে এক অজ্ঞাত রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর প্রথমে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, জ্বর এবং রক্তবমি হয়। যেসব রোগী রক্তবমি করেছেন তারা মারা গেছেন। গত জানুয়ারি মাসেই পত্ত রঞ্জন চাকমা (২৫) এসব উপসর্গ নিয়ে মারা যান। ফেব্রুয়ারি মাসে একই গ্রামের বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫) ও ডালিম কুমার চাকমা (৩৫), মার্চে চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) ও সোনি চাকমা (৮) মারা যান।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামে ৮৬টি পরিবার রয়েছে। পরিবারগুলোর অনেকেই জ্বর, রক্তবমি ও পেট ব্যথায় আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে গ্রামবাসীর মনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রামের আশপাশে কোনো ক্লিনিক কিংবা চিকিৎসাকেন্দ্র নেই।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিহার রঞ্জন নন্দী বলেন, “মেডিকেল টিমের সদস্যরা বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনটি দলে ভাগ হয়ে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। তারা রোগের উপসর্গ ও লক্ষণ বুঝে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। যেহেতু বমি হচ্ছে, তাই বলা যাচ্ছে এটি খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়ে থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “লক্ষণ ও উপসর্গ শুনে ধারণা করছি ঘন ঘন বমি এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নেওয়ায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বৈদ্য কিংবা কবিরাজদের ওপর নির্ভর না করে যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিত, তাহলে কাউকে মৃত্যুবরণ করতে হতো না।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফোরকান অনুপম এলাহী জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়াতে বিজিবির সার্বক্ষণিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।