শুটিং থেকে ফিরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে সুজাতা
শুটিং থেকে বাসায় ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঢাকাই সিনেমার জ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী সুজাতা আজিমকে ঢাকার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় সুজাতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে চিকিৎসকেরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
মঙ্গলবার গাজীপুরে “অপারেশন জ্যাকপট” সিনেমার শুটিং শেষে বাসায় ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে হঠাৎ বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুজাতার নাতি ফারদিন আজিম।
সম্পর্কিত খবর
কয়েক বছর ধরেই হৃদ্রোগে ভুগছেন ৭২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। এর আগেও একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সুজাতা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সত্তর ও আশির দশকের এই জনপ্রিয় নায়িকা।
পাঁচ দশক আগে সুজাতা চলচ্চিত্রে নাম লেখান। সিনেমায় খুব একটা নিয়মিত না হলেও টেলিভিশন নাটকে তাঁকে এখনো মাঝেমধ্যে দেখা যায়।
সুজাতার পারিবারিক নাম তন্দ্রা মজুমদার। কুষ্টিয়ার এক জমিদার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালের দিকে দাঙ্গা শুরু হলে পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন তারা। ঢাকায় এসে নাটক ও থিয়েটারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সুজাতা।
মঞ্চে আমজাদ হোসেনের “মায়ামৃগ” নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করার সময় পরিচালক সালাউদ্দিনের চোখে পড়েন তিনি। এই পরিচালক তখন “ধারাপাত” সিনেমার নায়িকা খুঁজছিলেন। নাটকে সুজাতার অভিনয় দেখে পরিচালক তার ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন। সিনেমায় অভিনয়ে আসার পর পরিচালক সালাউদ্দিন তার নাম বদলে রাখেন সুজাতা।
বড় পর্দায় সুজাতা প্রথম অভিনয় করেন একটি নাচের দৃশ্যে, সেটি “দুই দিগন্ত” সিনেমায়। তবে প্রেক্ষাগৃহে প্রথম মুক্তি পায় “ধারাপাত”। সুজাতার জীবন আমূল বদলে দেয় ১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া লোককাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র “রূপবান”, যা আজও একটা ইতিহাস। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই রাতারাতি তারকা বনে যান সুজাতা।
সুজাতার স্বামী অভিনয়শিল্পী, পরিচালক ও প্রযোজক আজিম মারা গেছেন ২০০৩ সালে। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন সুজাতা। এছাড়া শিল্পকলায় অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে একুশে পদক পান তিনি।