• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কুবি সাংবাদিকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে আইনি নোটিশ

প্রকাশ:  ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১৫:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

উপাচার্যের বক্তব্য উদ্বৃত করে সংবাদ করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি)'র ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ইকবাল মনোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের (২০১৭-১৮) শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আফজলনগর গ্রামে।

তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক।

আজ বুধবার(৯আগস্ট) এই শিক্ষার্থীর পক্ষে নোটিশ টি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান।

রেজিস্ট্রি ডাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ৮ জনকে এই আইনি নোটিশ পাঠোনো হয়েছে। উপাচার্য ছাড়া বাকি যাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- শিক্ষা সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, কুবির উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান।

নোটিশ দাতার আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান পূর্ব -পশ্চিম বিডিকে বলেন, “নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে বহিষ্কার আদেশটি প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করা হয়েছে। না করলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে উচ্চ আদালতে বহিষ্কার আদেশটির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করা হবে।”

গত ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন। ওই বক্তব্য উদ্ধৃত করে ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার অনলাইনে ‘দুর্নীতি হচ্ছে তাই বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে: কুবি উপাচার্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন করেন ইকবাল মনোয়ার।

ওই প্রতিবেদনে উপাচার্যকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘অনেকেই বলে দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন হচ্ছে না। কিন্তু আমি বলব উল্টো কথা। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলতে পারে। যে ঘুষ খায়, সে পদ্মাপাড়ে যায় ইলিশ খেতে।

এতে পদ্মা পাড়ের গরিব মানুষেরা আজ ধনী হচ্ছে। দুর্নীতি এভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখে। তাই অর্থনীতিবিদগণ দুর্নীতি নিয়ে কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্য করে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। নৈতিকতার জায়গায়ও এটি প্রশ্নবিদ্ধ। তবে অর্থনীতির জায়গা থেকে যদি বলি, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাধা নয়।’

এই সংবাদের জেরে গত ২ আগস্ট ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোন আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া তার সংবাদে উল্লেখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধুমাত্র উপাচার্যের হুবুহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন যার অডিও রেকর্ড তার কাছে আছে। এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।

নেটিশে আরো বলা হয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোনো বোর্ড বা বিধি তৈরি হয়নি। এই অবস্থায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি এবং এখতিয়ার বহির্ভূত। তাছাড়া প্রকাশিত সংবাদে উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার তার আছে। তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংবিধানের ৩৯(২)(খ) অনুচ্ছেদে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছে। সেই সাথে ইকবাল মনোয়ারকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার কোনো সুযোগ না দিয়ে এভাবে বহিষ্কার করা ন্যায়বিচার পরিপন্থি।

বহিষ্কারাদেশ,কুবি সাংবাদিক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close