• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কোন পক্ষে যাবে, আলো নাকি অন্ধকার?

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:৫৬
সিরাজুল ইসলাম রুবেল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে আমার এই লেখা৷ যদিও তাদের নিয়ে আগে কয়েকটি সংবাদপত্রে লিখেও প্রতিবাদ জানিয়েছি৷

প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকে, তাদের কেউ কেউ প্রথমে 'মহাকাশে' যাওয়ার স্বপ্ন দেখে৷ দেখবে না কেন? তারা কত বড় স্বপ্ন নিয়ে হাজার জনকে পিছনে ঠেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে৷ তারা ভারতের পরমাণু বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম সম্পর্কে জেনেছে৷ যিনি বলেছেন 'তোমরা আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখ, দেখবে আকাশে উড়তে না পারলেও অন্তত আকাশটা দেখার সুযোগ পাবে' হয় তো এই বাণী থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে তারা স্বপ্ন দেখতে শিখেছে৷ কিন্তু যে দিন থেকে সে হলে বিচরণ করে সেদিন থেকেই মহাকাশ তো দূরে থাক আকাশের দিকে তাকানোর কথা সে ভুলে যায়৷ যারা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না, তারা নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন৷ হ্যাঁ, এটিই সত্যি৷ কারণ জানবেন?

সম্পর্কিত খবর

    কারণ............! প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো বৈধ সিটের ব্যবস্থা রাখেনি৷ তাদের আইন করে 'অবৈধ' করে রেখেছে৷ এ বিষয়ে একটু বলি৷ ধরেন একটি শিশুর বাবা-মা শিশুটিকে জন্ম দিয়ে যদি আইন করে বলে, তুমি আগামী দুই বা তিন বছর আমাদের বাড়িতে থাকতে পারবে না এবং এ আইন ভঙ্গের জন্য শাস্তিও রাখে৷ তখন যদি শিশুটির বোঝার ক্ষমতা থাকতো, তাহলে নিশ্চয় যে বলতো জন্ম দেওয়ার সময় চিন্তা করলে হয়তো তার জন্য বাবা-মায়ের এই নিষ্ঠুর আইন করা লাগতো না৷ এখানে যে 'শিশুটির কথা বলছি, চিন্তা করেন তো? তার সাথে যে অন্যায়টা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সে প্রতিবাদ করছে! চিন্তা করা যায়? আরেকটি বিষয় চিন্তা করেন৷ আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয় তারা কি আদৌ শিশু হয়ে ভর্তি হয়? তাহলে আমরা প্রশাসনের নিষ্ঠুর নিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় না কেন?

    আসলে এরপর যে কারণগুলো বলব তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতিকেই আমি প্রথম এবং মুখ্য কারণ বলে মনে করি৷ বাকি কারণগুলো গৌণ৷ হলে উঠতে গেলে পলিটিক্যালি উঠা লাগে৷ তাই কোনো রাজনৈতিক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে হলে উঠতে হয়৷ তারপর শুরু হয় নির্যাতন৷ এই নির্যাতনের পরিধি কেমন তা কেউ জানে না৷ যদি জানতো তাহলে ওই শিশুটির মতো প্রতিবাদ করতো৷ অাবশ্যক শিশুটি প্রতিবাদ করতে পারার কারণ হলো সে প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা পেয়েছে৷ কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেটি পায় না৷ তারা হলে উঠলে 'বড় ভাই'দের কথা শুনতে বাধ্য৷ এটির জন্য তাদের নিয়ম-কানুন শিখানো হয়৷ এর জন্য রাতে 'গেস্টরুম' (যেখানে বড় ভাইয়েরা প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করে) ডাকা হয়৷ পলিটিক্যাল প্রোগ্রামে না গিয়ে ক্লাস বা পরীক্ষা দিতে গেলে কৈফিয়ত চাওয়া হয়৷ গেস্টরুম শেষে গভীর রাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ঘুরতে পাঠানো হয়৷ যা অমানবিক, এর বাহিরে অনেক নির্যাতন হয়ে থাকে যা আজ, আর বললাম না............৷

    এই ধরনের প্রতিবাদী লেখা অন্যকোনো শিক্ষার্থী লিখবে না৷ কারণ লিখলে তাকে হল ত্যাগ করতে হবে অথবা নির্যাতনের শিকার হতে হবে৷ সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত থেকে হয়তো আমি প্রতিবাদ করার সাহস পেয়েছি৷

    আসুন এই অন্যায়, অবিচার আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়ায়ের সময় এসেছে৷ ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে স্বাধীনচেতা প্রার্থীকে ভোট দিন৷ যে আপনাদের 'স্বাধীনভাবে চিন্তা' করার পরিবেশ সৃষ্টিতে সাহায্য করবে৷ কথা দিলাম, আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকব৷


    গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷ শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সংসদ নির্বাচনে পদপ্রার্থী৷

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close